হাড় কাঁপাচ্ছে শীত, কাঁপাবে আরও

ঢাকা, জাতীয়

নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 22:49:59

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে জেঁকে বসেছে শীত। গতকাল বুধবার থেকে তাপমাত্রা কমছে। তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। যা থাকতে পারে আরও পাঁচ দিন।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর থেকে রাজধানীর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। বাতাসের বাড়তি আর্দ্রতায় হিমশিম খেতে হচ্ছে নগরবাসীকে। তাই গরম কাপড় গায়ে দিয়ে, কানটুপি ও গলায় মাফলার পেঁচিয়ে রাজধানীর মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন। আর যারা এখনো গরম কাপড় নেননি তারা ভিড় করছেন দোকানগুলোতে।

ভোরে রাজধানীতে তাপমাত্রা ১৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার রাজধানীতে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১৬-১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। এদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজারহাটে ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে উত্তরের জেলাগুলোয় শীতের তীব্রতা আরও প্রকট হবে। রাজধানীতে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে। 

তিনি আরও বলেন, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। থাকতে পারে আরও পাঁচ দিন। ২৪ ডিসেম্বরের পর তাপমাত্রা বাড়তে পারে। কুয়াশাও কিছুটা কমবে। কিন্তু জানুয়ারির শুরুতে আবার শৈত্যপ্রবাহ বইতে পারে।

শীতের তীব্রতা উত্তরবঙ্গে তুলনামূলকভাবে বেশি। বৃহস্পতিবার ( ১৯ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে আগামী ৭২ ঘণ্টায় রংপুর অঞ্চলে শীতের প্রকোপ আরো বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এতে দুই তিন দিনের মধ্যে উত্তর জনপদে তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বর্তমানে রংপুর অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। এই তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের মৌসুমী বাতাস আর হিমালয়ের প্রভাবে রংপুর অঞ্চলের অন্য জেলাগুলোতেও তাপমাত্রা নিম্নমুখী রয়েছে।

অন্যান্য জেলার তুলনায় ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের প্রকোপ একটু বেশি মনে হয়। গত কয়েকদিন ধরে রাতভর ঝড়ছে কুয়াশা। হিমেল বাতাসের কারণে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। উত্তরের হিমেল বাতাসে নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন। কনকনে এই শীতে জেলাবাসীর জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

সারাদেশের মতো মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গায়ও বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সকাল থেকে কুয়াশা আর কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে জনজীবন স্থবির প্রায়। বৃহস্পতিবার মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

শীতের তীব্রতায় চাঁদপুরে নেমে এসেছে স্থবিরতা। সকালে চাঁদপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের।

গত দুদিনের প্রচণ্ড শীতে কাঁপছে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বিভিন্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলার কোথাও রোদের দেখা মেলেনি। জেলায় সকালে তাপমাত্রা ছিল ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে লোকজন শীত নিবারণের জন্য চেষ্টা করছে। সবচেয়ে কাতর হয়ে পড়েছে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ।

বৃহস্পতিবারের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ঢাকায় বাতাসের গতি উত্তর/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮-১২ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর