মানব উন্নয়নে ভূটান-মালদ্বীপের চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 23:45:33

মানব উন্নয়ন সূচকে ভারত, ভূটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার চেয়েও পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৩৫তম। তবে পাকিস্তান, মিয়ানমার, নেপালের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন ২০১৯’ তুলে ধরেন ইউনাইটেড ন্যাশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি)। প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।

মানব উন্নয়ন সূচককে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলো হলো অতি উচ্চ মানব উন্নয়ন, উচ্চ মানব উন্নয়ন, মধ্যম মানব উন্নয়ন ও নিচু মানব উন্নয়ন।

অতি উচ্চ মানব উন্নয়নে রয়েছে ৬২টি দেশ। এর মধ্যে প্রথম নরওয়ে, দ্বিতীয় সুইজারল্যান্ড, তৃতীয় আয়ারল্যান্ড, চতুর্থ জার্মানি ও পঞ্চম হংকং। উচ্চ মানব উন্নয়ন সূচকে রয়েছে ৫৪টি দেশ। এর মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ। শ্রীলঙ্কার অবস্থান ৭১ আর মালদ্বীপের ১০৪তম। মধ্যম মানব উন্নয়নের তালিকায় রয়েছে ৩৬টি দেশ। এর মধ্যে ভারতের অবস্থান ১২৯তম, ভুটানের ১৩৪তম, বাংলাদেশের ১৩৫তম, মিয়ানমারের ১৪৫তম, নেপালের ১৪৭তম ও পাকিস্তানের ১৫২তম। নিচু মানব উন্নয়নের ৩৫টি দেশের মধ্যে থাকা আফগানিস্তানের অবস্থান ১৭০তম।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, ‘বেশকিছু সূচকের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন করা হয়। লিঙ্গ সমতা, শিক্ষা সূচকে বাংলাদেশ এগোচ্ছে। বিশেষভাবে আমরা মাথাপিছু আয় বাড়ানোর দিক থেকে এগিয়েছে। তবে আলোচকদের কাছ থেকে শুনেছেন, অসাম্য আছে। তারা বলেছেন, আমাদের সকল প্রবৃদ্ধি অর্থহীন হবে, যদি আমরা বৈষম্য কমিয়ে আনতে না পারি। শেষ পর্যন্ত আমাদের এই বৈষম্য কমাতে হবে।’

ইউএনডিপির বক্তব্য তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘মূল যে শক্তিগুলো কেন্দ্রীভূত কিছু হাতে। ব্যাংকগুলো কিছু হাতে, এর ব্যবস্থাপনা কিছু হাতে, গার্মেন্টস কিছু হাতে – এভাবে অর্থনৈতিক শক্তিগুলো কিছু হাতে পুঞ্জিভূত হওয়ার কারণে বৈষম্য বেড়ে যাচ্ছে। নীতি-নির্ধারণ ক্ষেত্রে কতিপয় এসব মানুষের প্রভাব খুব বেশি। সেখানে সাধারণ মানুষের সংযুক্তি কম, যোগাযোগও কম।’

মানব উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছেন পরিকল্পনামন্ত্রী, ছবি: বার্তা২৪.কম

বৈষম্যের অন্য কারণগুলো তুলে ধরে শামসুল আলম বলেন, ‘উন্নয়ন ব্যয়ের অসাধুতার ও দুর্নীতির কারণে অসাম্য বেড়ে যায়। শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকারে অসাম্য রয়েছে। এটিও বৈষম্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে ভূমিকার রাখছে। প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, অসাম্যও বাড়ছে। আমাদের দেশে নারীর অংশগ্রহণ অনেক কম।’

এটা অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশে অসাম্য বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন শামসুল আলম। এ ক্ষেত্রে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এই আলোচনা থেকে আমরা যেটা পেলাম, তা আগামী পঞ্চবার্ষিকী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে অসাম্য যাতে সৃষ্টি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।’

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘সম্পদ এখানে আসবে, ওখানে যাবে, এটাই সম্পদের হিসাব। সম্পদের গতিবিধিতে আমরা হাত দিচ্ছি আমাদের মত করে। সামাজিক নিরাপত্তার ওপর আমরা জোর দিয়েছি। নানা ধরনের কাজ আমরা করি, দরিদ্র মানুষের কল্যাণে সরাসরি।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য টিকা, বিনামূল্যে বই বিতরণ, দুপুরে খাবার দেয়া শুরু করেছি, স্কুলে খাবার দেয়ার বিষয়ে আমরা সামনে আরও যাব, পল্লী ক্লিনিক চালু রেখেছি, সুপেয় খাবার পানির জন্য চাপ কল হাজারে হাজারে গাড়ছি, টয়লেট লাখে লাখে সরবরাহ করছি। এসব করায় জীবনযাত্রার মান অনেক বেড়েছে। এভাবে আমরা বৈষম্য কমানোর চেষ্টা করছি।’

এ সময় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ইউএনডিপির প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর