শেরপুর (বগুড়া) থেকে: ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের বগুড়া জেলা সীমানার ৬৮ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় সাতটি ব্রিজ ও কালভার্ট রয়েছে। এই সাত সেতু ও কালভার্টের মধ্যে প্রায় সবগুলোই দুর্ঘটনা প্রবণ এবং মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে সব থেকে বেশি ভয়াবহ ও মরণ ফাঁদ হিসেবে পরিচিত শেরপুরের ঘোগা ব্রিজ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বাস চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছরই ছোট থেকে শুরু করে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে এই ব্রিজে। এই ৬৮ কিলোমিটার রাস্তায় যতোগুলো পয়েন্ট দুর্ঘটনা কবলিত তার মধ্যে শুধু এই ব্রিজেই দুর্ঘটনার হার সবচেয়ে বেশি।
তবে এতো কিছুর পরও ব্রিজটি পরিপূর্ণভাবে নির্মাণ হয়নি। মাঝে মধ্যেই ছোটখাটো কিছু সংস্কার কাজ হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে ঈদযাত্রাকে সামনে রেখে ঘোগা ব্রিজ এখন আতঙ্কের নাম চালকদের কাছে।
শুক্রবার (৩১ মে) ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের বগুড়া জেলা সীমানার শেরপুরে অবস্থিত ব্রিজটি সরেজমিনে চালকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের তুলনায় ব্রিজটি প্রায় অর্ধেক প্রশস্ত হওয়ায় সেটি এখন মরণ ফাঁদ। দুইটি বাস বা ট্রাক ব্রিজটি দিয়ে এক সঙ্গে যাতায়াত করতে পারে না।
এ বিষয়ে যাতায়াত করা বিভিন্ন পরিবহনের চালকরা বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছরের পুরনো সেতু, যার প্রশস্ততা ২৪ ফুট। অথচ মহাসড়কের প্রশস্ততা ৪০ ফুট। ফলে এই ব্রিজ পার হতে চালকদের অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। তবে ব্রিজটি দিনের বেলার তুলনায় রাতে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। সেই কারণে ঈদ যাত্রাকে সামনে রেখে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে চালকদের। না হলে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।’
এ বিষয়ে শ্যামলী পরিবহনের চালক মো. জালাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ব্রিজটির সামনে ও পেছনে বড় বড় দুটি বাঁক রয়েছে। সামনে ও পেছনের গাড়ি দেখতে সমস্যা হয়। ফলে হঠাৎ করে দুই গাড়ির মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে যায়। এমন অনেক দুর্ঘটনা ব্রিজটিতে ঘটেছে এবং বহু লোক হতাহত হয়েছেন।'
‘সব চালককে ব্রিজটি পার হওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে। কেননা এই ব্রিজে অল্প একটু অসাবধানতা ঘটিয়ে দিতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।'
শাহ ফাহতে আলী পরিবহনের চালক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ঈদ যাত্রার আগে প্রতিবারই শোনা যায় ব্রিজটি পূর্ণ নির্মাণ করা হবে। কিন্তু কোনো কিছুই শেষ পর্যন্ত আর হয় না। ঈদযাত্রা উপলক্ষে গাড়ির পরিমাণ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ঝুঁকিও বাড়ে অনেক বেশি এই ব্রিজে। তাই সতর্কতা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই এই ব্রিজে।’
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. আকবর আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রতিবারই দুর্ঘটনা হলে ব্রিজটি সংস্কার করা হয়। কিন্তু পূর্ণ নির্মাণ করে প্রশস্ত করা হয় না। ফলে ঝুঁকি থেকেই যায় এই পয়েন্ট। আর এ কারণে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের এই স্পটে সর্বোচ্চ দুর্ঘটনার শিকার হয়। তাই এবারও ঈদ যাত্রাকে ঘিরে এই পয়েন্টে আতঙ্ক থেকেই গেছে।’