সরকারি চাকরিতে ৩৫ প্রত্যাশীদের শাহবাগে অবস্থান

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2025-01-20 13:09:55

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩৫ নারীদের ৩৭ ও ক্ষেত্র বিশেষ উন্মুক্তের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ৩৫ প্রত্যাশী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা নাগাদ রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবি জানান তারা।

আন্দোলনকারীরা বলেন, চাকরিতে আবেদনের বয়স সীমা জনপ্রশাসন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নারীদের ক্ষেত্রে ৩৭ বছর এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩৫ বছর বাস্তবায়নের দাবিতে আমরা এই শিক্ষার্থী সমাবেশের ডাক দিয়েছি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, আজকে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি শুধুমাত্র ১২ বছরের একটি যৌক্তিক দাবিকে বাস্তবায়ন করার জন্য। আমরা পড়ার টেবিল থেকে রাজপথে আসতে বাধ্য হয়েছি। রাষ্ট্র আমাকে বাধ্য করেছে। রাষ্ট্র কর্তৃক সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছিল নারীদের ক্ষেত্রে ৩৭ বছর এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩৫ বছর বাস্তবায়নের। কিন্তু সেটা কোন অশুভ শক্তির বাধাই সেটাকে ৩২ করা হলো সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা রাষ্ট্রকে বলেছিলাম ৩৫ যদি বাস্তবায়ন না হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত ৩৫ বাস্তবায়ন না হবে এই হাজার হাজার শিক্ষার্থী রাজপথেই থাকবে। তাদেরকে রাজপথ থেকে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে নিতে হলে অবশ্যই অনতিবিলম্বে ৩৫ বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, ৩৫ একটা যৌক্তিক দাবি ন্যায্য অধিকার। সারা বাংলাদেশে করোনার প্রভাব পড়ে আড়াইটি বছর শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে আড়াই বছর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চলে গেছে। বাংলাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্টে সেশন জট আছে। এই সেশন জটের কারণে একটা শিক্ষার্থীর পড়াশোনা শেষ করতে যেখানে ৫ বছর লাগার কথা সেখানে ৮ থেকে ৯ বছর লাগছে। আমরা ৯০ দশকের শিক্ষার্থী যারা ছিলাম তারা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়েছি। বিগত বছরগুলোতে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও  দলীয়করণ হয়েছিল। সবকিছু অপেক্ষা করে ভাইবা পর্যন্ত যাওয়ার পরেও আমাদের চাকরি হয়নি। আমরা সরকারের কাছে কোনো চাকরি চাই না। আমাদের সাংবিধানিক যে অধিকার চাকরিতে আবেদনের কম্পিটিশনের সুযোগ সেটা এই রাষ্ট্রকে অবশ্যই আমাদের দিতে হবে। আমাদের এই দাবি যতক্ষণ পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে সুরাহা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই আন্দোলন রাজপথে ছিল রাজপথে আছে এবং রাজপথেই থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সংস্কার কমিশনের কাছে বলেছিলাম, দেখেন বিশ্বের কোন উন্নত, অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল রাষ্ট্র আছে ৩৫ এর নিচে। তারা বলেছে শুধু পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ ছাড়া কোনো রাষ্ট্রে ৩৫ এর নিচে নাই। তাহলে আমার প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি সেক্টরে যখন উন্নত রাষ্ট্রগুলোকে ফলো করে, তাহলে চাকরিতে বয়সের ক্ষেত্রে কেন উন্নত রাষ্ট্রগুলোকে ফলো করছে না। এই বৈষম্য রয়েই গেছে। ২৪’র জুলাই অভ্যুত্থানে যখন আমরা অংশগ্রহণ করেছিলাম তখন স্বপ্ন নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিলাম যে আমাদের সঙ্গে কোনো বৈষম্য করা হবে না। আজ জুলাই অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি আমরা যারা ভুক্তভোগী ছিলাম তারা এখনো সেই ভুক্তভোগীই আছি। আমাদেরকে নিয়ে রাষ্ট্র,পলিটিক্যাল দল, কোন আমলা বা রাজনৈতিক দল কেউ আমাদেরকে নিয়ে ভাবেন না। তারা তাদের পকেট ভারী করার জন্য বসে আছেন। 

এ সম্পর্কিত আরও খবর