নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙ্গামাটি সদরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১১ টা সময় রাঙ্গামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার মসজিদ মার্কেটের সামনে ‘ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ’-এর ব্যানারে এই মানববন্ধন করা হয়।
‘ফ্যাসিস্ট শাসন মুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম চাই’ স্লোগানে এই মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদের সদস্য শ্রদ্ধা চাকমা।
লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন, রাঙ্গামাটিতে সমবেত হয়েছি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানাতে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই জানি, গত ৫ আগস্ট এক ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানে মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ও দেশত্যাগের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন দেশ পরিচালনা করছে। এই সরকার দেশকে হাসিনার কুশাসন থেকে মুক্ত করতে বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিয়োগকৃত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের সরিয়ে দিয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিচ্ছে। এই প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে দেখা যায়, সরকার অবশেষে গত ৭ নভেম্বর তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করেছে। আমরা সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।
কিন্তু আমরা আশা করেছিলাম সরকার একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদও পুনর্গঠন করবে। আমাদের প্রশ্ন, জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করা হলে, আঞ্চলিক পরিষদ কেন পুনর্গঠন করা হচ্ছে না?
লিখিত বক্তব্যে শ্রদ্ধা চাকমা বলেন, ১৯৯৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন পাস করার পর ১৯৯৯ সালের ২৭ মে হাসিনার সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করেছিল। সেই সময় এই পরিষদে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তারা এখনও একনাগাড়ে ক্ষমতায় রয়েছে। গত ২৫-২৬ বছরে কোন সরকার আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন বা পুনর্গঠন করেনি; এমনকি পুনঃনিয়োগও দেয়নি। অথচ পরিষদের মেয়াদ হলো ৫ বছর। সুতরাং বর্তমানে যারা আঞ্চলিক পরিষদে রয়েছে, তারা বৈধভাবে আছে কি না দেখা দরকার?
আঞ্চলিক পরিষদ কী কাজ করে, তার জবাবদিহিতা কোথায়, তার তহবিলের হিসাব কী এসব বিষয়ে আমরা সাধারণ জনগণ কিছুই জানি না। জনগণের উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করা হলেও, জনগণের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই, জনগণের কাছে তার কোন দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নেই।
লিখিত বক্তব্যে তারা সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে, নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে এবং এরপর এই সরকারের আমলে তিন জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
মানববন্ধন চলাকালে ‘RC-এর পুনর্গঠন চাই; জেলা পরিষদ পুনর্গঠন হলে RC কেন নয়’; RC-তে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের চাই না; RC-এর জবাবদিহিতা নিশ্চিত কর; RC-এর তহবিলের হিসাব দাও; পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিষদসমূহের সংস্কার চাই; অবিলম্বে পাহাড়কে ফ্যাসিস্টমুক্ত কর’ ইত্যাদি স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।