ইলিশের প্রজননে বিপর্যয়, নদীতে পলিবর্জ্য ও ডুবোচরের চ্যালেঞ্জ

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম পটুয়াখালী | 2024-10-27 18:08:55

ডুবোচর ও পলিবর্জ্যের কারণে বাংলাদেশের নদ-নদীর মিঠা পানিতে ইলিশের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। গভীর সমুদ্র থেকে বংশবিস্তারের জন্য উপকূলীয় নদ-নদীতে আসা ইলিশ এখন ডুবোচর ও নদীতে জমে থাকা পলিথিনের কারণে বিপাকে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত সময়ে নদীদূষণ বন্ধ করা এবং ডুবোচর অপসারণ না করা হলে ইলিশের সংখ্যা কমে যাবে এবং মাছের রাজা ইলিশ বাংলাদেশ ছেড়ে পাশের দেশে চলে যাবে।

মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের প্রেক্ষাপটে দেশের বৃহত্তম মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুর ঘুরে দেখা গেছে, শিববাড়িয়া নদীর দুই তীরে হাজারো সামুদ্রিক মাছ ধরা ট্রলার নোঙর করে আছে। তবে নদীর দুই তীরে অসংখ্য পলিবর্জ্যের স্তূপ দেখা যাচ্ছে। মাছ শিকারি জেলে মো. শহিদ বলেন, নদীতে জাল ফেললে মাছের তুলনায় পলিথিন বেশি ওঠে, যা আমাদের জালের ক্ষতি করে।

মৎস্য ব্যবসায়ী মো. ফজলু গাজী জানান, নদীর ডুবোচরই ইলিশ মাছের প্রধান শত্রু। আন্ধারমানিক, তেঁতুলিয়া, শিববাড়িয়া ও সোনাতলা নদীর মোহনা ও প্রবেশমুখে ডুবোচরের কারণে ইলিশ নদীতে ঢুকতে পারছে না।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, অক্টোবর মাসের পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় ইলিশের প্রজনন মৌসুম শুরু হয়। ডুবোচরের কারণে ইলিশদের গতিপথ পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. লোকমান আলী জানান, নদীগুলোতে অবাধে বজর্য ফেলায় পানির দূষণ আগের তুলনায় বেড়েছে দ্বিগুণ। দেশের ইলিশের অভয়াশ্রম খ্যাত আন্ধারমানিক ও তেঁতুলিয়া নদীর প্রবেশ পথ আগের তুলনায় অনেকটা ভরাট হয়ে গেছে। সমুদ্র থেকে মা ইলিশ অভয়াশ্রমে প্রবেশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে আগের তুলনায় উপকূলের নদীগুলোতে মিলছে না ইলিশসহ সব ধরনের মাছ।

কলাপাড়া মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদীর দূষণ ও নিষিদ্ধ ছোট ফাঁসের জাল ব্যবহারের কারণে ইলিশের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাই ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধ এবং পলিবর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর