তালতলীতে ইউপি’র কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা | 2024-10-17 17:42:29

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তোপের মুখে শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর থেকেই গা-ঢাকা দেন বরগুনার তালতলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। মাঝে মধ্যে তারা প্রকাশ্যে এলেও বেশিভাগ সময় পলাতক থাকেন। এর ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৫টিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নাগরিকদের সেবা থেকে বঞ্চিত রেখেছেন তারা। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর নিরাপত্তাজনিত কারণে আত্মগোপনে চলে যান ৫ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও অধিকাংশ সদস্যরা। তাদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছোটবগী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান তনু এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা পরিষদে মাসের পর মাস ধরে ঘুরেও সেবা পাচ্ছেন না।

প্যানেল চেয়ারম্যানের মাধ্যমে দায়সারাভাবে পরিষদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তবে নিয়মিত সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র নির্বাচিত চেয়ারম্যান ফরাজী মো. ইউনুচ ও শারিকখালী ইউপিতে হাত পাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ফারুক খান তাদের কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত আছেন ও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাধারণ-সম্পাদক ও বড়বগী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর মুন্সী, উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার, জেলা যুবলীগের সদস্য ও নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া, উপজেলা আ'লীগের সাবেক সদস্য ও কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম সিকদার পনু মাঝেমধ্যে ইউপিতে উপস্থিত থাকলেও বেশি সময় আত্মগোপনে থাকেন। বেশিরভাগ সময় তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকে। কেউ আবার নিজ বাসভবন থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। এতে বিপাকে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা।

সেবা থেকে বঞ্চিত তারা বলছেন ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারিশ সনদপত্র, নাগরিক সনদপত্র, গ্রাম আদালত, জন্ম ও মৃত্যুসনদসহ সকল সেবা পেতে নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। অনেকেই ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সেবা না পেয়ে ফিরে আসছেন। এ নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এবিষয়ে আবুল, মিজান, ফরুকসহ একাধিক সাধারণ মানুষের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে গেলে ঠিকমত চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের পাওয়া যায় না। সেবা না নিয়েই ফিরে আসতে হয়। এভাবে আর কত দিন ভোগান্তি পোহাতে হবে।

উপজেলা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন আক্কাস মৃধা বলেন, নৌকা নিয়ে যে সব চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তারা শেখ হাসিনা’র দোসর। শেখ হাসিনার পতন হলেও এরা এখনও বহাল তবিয়াতে রয়েছেন। তারা দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তাদের দ্রুত অপসারণ করে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধির দাবি করছি সরকারের কাছে।

এ বিষয়ে জানতে বড়বগী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর মুন্সি, ছোটবগী ইউপি চেয়ারম্যান তৌফিক উজ্জামান তনু ও কড়ইবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম সিকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর