বরিশাল: চলতি বছরের মধ্যেই শেষ হতে চলেছে বরিশালের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের নির্মাণ কাজ। আর ২০১৯ সালের শুরুতেই বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে নির্মাণাধীন ওই ভবনে আদালতের বিচার কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর এই নতুন ভবনেই এতোদিনের দুর্ভোগ ঘুচবে আইনজীবীদের।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি ১০ তলা বিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আর ওই দিনই আইনমন্ত্রী মো. আনিসুল হক আনুষ্ঠানিকভাবে এই নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। এর আগে ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর বরিশালের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের কাজের অনুমোদন দেয়া হয়। পাশাপাশি প্রজেক্টের ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩৫ কোটি ৮৫ লাখ ২৬ হাজার ২১৭ টাকা। পরে ৩১ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ৪৭৫ টাকায় কাজটি অনুমোদন দেয়া হয়। আর অনুমোদনের ৩০ মাসের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে। সেই অনুযায়ী ১২ জানুয়ারি শুরু হয় নির্মাণ কাজ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, শুরু থেকেই দ্রুত গতিতে চলতে থাকায় ইতোমধ্যেই শেষ পর্যায়ে রয়েছে এই ভবনের কাজ। আর এ কাজ শেষ হলে আদালতের এজলাসসহ বিচারপ্রার্থীদের যে দুর্ভোগ ছিল তা সমাধান হবে। এছাড়াও ভবনের অভাবে যেসব এজলাস বর্তমানে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় রয়েছে। সেগুলোও এই ভবনে স্থানান্তর করা হবে।
ভবন নির্মাণের বিষয়ে বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায় জানান, নির্মিত ১০ তলা বিশিষ্ট এই ভবনের প্রথম দুই তলার আয়তন ১৩ হাজার ৯১২ ফিট। আর বাকি ৮টি তলার আয়তন ১২ হাজার ১৫৩ স্কয়ার ফিট। এছাড়াও ভবনে বিচারক ও বিচারপ্রার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে আলাদা ব্যবস্থা।
তিনি আরও জানান, ১০ তলা জুডিশিয়াল ভবনে ১৪টি এজলাস থাকবে। এর পাশাপাশি বিচারকদের খাসকামরা, শিক্ষানবিশ বিচারকদের জন্য আলাদা কক্ষ, কনফারেন্স কক্ষ, নামাজের কক্ষ, ক্যাফেটেরিয়া, গাড়ি পাকিংয়ের ব্যবস্থা। এছাড়াও বিচারপ্রার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা দূরীকরণে প্রতিটি ফ্লোরে রাখা হয়েছে ৪ থেকে ৫টি টয়লেট। বিচার প্রার্থীদের বসার জায়গার পাশাপাশি ছোট শিশুদের জন্যও আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে ওঠা নামার জন্য দেয়া হবে তিনটি লিফট। যার মধ্যে একটি বিচারকদের এবং অপর দুইটি আদালতের অন্যান্য কর্মচারী ও বিচারপ্রার্থীদের জন্য থাকবে।
নির্বাহী প্রকৌশলী আরও জানান, এখন পর্যন্ত ভবনের নির্মাণ কাজে ২১ কোটির অধিক টাকা ব্যয় করা হয়েছে। আর যেটুকু কাজ বাকি আছে তাতে নির্ধারিত খরচের চেয়ে কিছু টাকা বেশি ব্যয় হতে পারে। আর চলতি বছরের মধ্যেই এই নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে। এছাড়াও ভবনের কক্ষের টাইলস বসানো, দরজা লাগানো, রঙ করা, ও ইলেকট্রিক্যাল কাজ সহ সামান্য কিছু কাজ বাকি আছে, সেটাও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এছাড়াও নব নির্মিত ভবনে আদালতগুলোর আসবাবপত্রের ব্যাপারে তিনি জানান, নির্মাণ কাজ শেষ হলে আসবাবপত্র ক্রয়ের বিষয়ে নতুন করে আলাদা টেন্ডারের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।