প্রায় প্রতিটি মানুষের জীবনেই এমন একটা সময় আসে, যখন আমরা নিজেদের জীবনটাকে ভাগ করে নেই প্রিয় মানুষটির সঙ্গে। জীবনসঙ্গীর সুখের মধ্যে নিজের সুখ খোঁজে পাই। সঙ্গীর মন খারাপে নিজেই অশান্ত হয়ে যাই। অনেক সময় দেখা যায় সঙ্গী কোনো কারণে রেগে আছে, মেঘ জমে আছে তার মন আকাশে। আপনার সঙ্গে কোনো কথাই বলতে চাচ্ছে না, মুখ ভার করে আছে।l
এমন হলে ভেঙ্গে পড়ার কিছুই নেই। সম্পর্কের টানাপোড়নে প্রায় সবার সঙ্গে হরহামেশাই এটি ঘটে থাকে, যখন প্রিয় মানুষটিকেও মন খুলে সব বলা যায় না। যদিও, পরিস্থিতি এমন হলে তা বাড়তে দেওয়া ঠিক নয়। যত দ্রুত সম্ভব নিজেদের মান-অভিমান মিটিয়ে ফেলা উচিত। কেননা, প্রায়শই এমন তুচ্ছ কিছু বিষয় থেকে সম্পর্কে আসে তিক্ততা। এমন কি বিচ্ছেদও হতে পারে। সময় থাকতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাই সঙ্গীকে সব সময় খুশি রাখার চেষ্টা করাই ভালো। অল্প কিছু কৌশল অবলম্বন করে খুব সহজেই খুশি রাখতে পারেন আপনার সঙ্গীকে।
সঙ্গীকে খুশি রাখতে কিছু টিপস জেনে রাখুন-
ইগো দূরে রাখুন
এক সঙ্গে থাকার ফলে অনেক সময়ই দুজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। এমন হতেই পারে আপনি সঠিক, ভুলটা আপনার সঙ্গীর। কিন্ত আপনার সঙ্গী নিজের ভুলটা বুঝতে পারছে না। কিংবা নিজের ভুল বুঝেও চুপ করে আছে। বেশিরভাগ মানুষই এমন পরিস্থিতিতে সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারে না। নিজেদের ইগো নিয়ে বসে থাকে। এমনকি কথা বলাও বন্ধ হয়ে যায়নিজেদের মধ্যে। পরিস্থিতি এমন হলে নিজের ইগোকে প্রাধান্য না দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে হবে । কথা বলে তার রাগের কারণটি খুঁজে বের করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
কথা শুনুন
মানুষের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা অনেক জরুরি। কথা বলার সময় মনোযোগ দিয়ে কেউ কথা শুনলে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। একসঙ্গে থাকার পরও যখন কেউ ফোন স্ক্রলিং কিংবা অন্য কোন কাজে ব্যস্ত থাকে এতে ক্রমাগত দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তাই আপনার সঙ্গী যখন কথা বলবে তখন তার দিকে মনোযোগ দিন। ঝগড়া না করে তার কথা শুনুন। প্রয়োজনে তাকে পরামর্শ দিতে পারেন। সঙ্গীর প্রতি আপনার মনোযোগের ফলে সঙ্গী নিজেকে মূল্যবান ভাবতে শেখে।
ক্ষমা চান
ক্ষমা চাওয়া আমাদের ব্যক্তি জীবনে একটি বিশেষ গুণ । আমরা সহজেই কেউ ক্ষমা চাই না। ক্ষমা চাইলেই আমরা ছোট হয়ে যাবো এমন কিছু ভেবে থাকি। এমন যারা ভেবে থাকেন, তাদের ধারণা সঠিক নয়। আপনার একটি ছোট সরি যদি কাউকে খুশি করতে পারে, তবে এতে আপনি কখনোই ছোট হবেন না। তাই ক্ষমা চাইতে শিখুন। সঙ্গীর নিকট ক্ষমা চেয়ে কেউ ছোট হয় না বরং সম্পর্ক আরও মধুর হয়।
ভালোবাসা প্রকাশ
সঙ্গীকে ভালোবাসুন! এমন অনেকেইিআছেন, যে সঙ্গীকে খুব ভালোবাসলেও তা যথাযথভাবে প্রকাশ করেন না। অনেক সময় আপনার ভালোবাসার গভীরতা সঙ্গী বুঝতেও পারে না। কাউকে ভালোবাসলে তাকে সেটা অনুভব করাতে হবে। বুঝাতে হবে তার প্রতি আপনার ভালোবাসা- অনুভূতি। তার যত্ন নিতে হবে। ছোট কিংবা বড় উপহার দিয়ে মাঝে মাঝে তাকে সারপ্রাইজ দিতে পারেন কিংবা কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতে পারেন। তার সঙ্গে সময় কাটান। এভাবেই সঙ্গীর প্রতি আপনার ভালোবাসা সহজেই প্রকাশ করতে পারবেন।
অতীত সামনে না আনা
আতীতে যা কিছুই ঘটে থাকুক, বর্তমানে কখনো অতীত টেনে আনবেন না। মান-অভিমান হতেই পারে। চুপ থাকার চেষ্টা করুন, তখন নিজেদের সুখের সময়ের কথাগুলো ভাবুন। অতীতের এমন কোন বিষয় সামনে আনবেন না যাতে বর্তমানে এর প্রভাব পড়ে। অতীতের তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে সম্পর্কে টানা- পোড়নের সৃষ্টি হয়। সম্পর্ক সুন্দর রাখতে সঙ্গীর অতীত নিয়ে কথা এড়িয়ে চলুন।
হাসানোর চেষ্টা করুন
হাসলে নাকি মন ভালো হয়ে যায়! তাই সঙ্গীকে হাসানোর চেষ্টা করুন। কোনো কারণে রাগ করে থাকলে তাকে হাসিয়ে রাগ ভাঙ্গাতে পারেন। এভাবে নিজেদের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করে তুলুন। সঙ্গী হাসতে না চাইলেও এমন কিছু করুন যাতে সে হাসতে বাধ্য হয়। কেননা, সুস্থ মননেই সুস্থ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তথ্যসূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া