মুসলিম বিশ্বের নোবেলখ্যাত ‘কিং ফয়সাল প্রাইজ’ (কেএফপি) বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর চিকিৎসা, বিজ্ঞান ও ইসলাম শিক্ষা ক্যাটাগরিতে চারজন পুরস্কার লাভ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে কিং ফয়সাল ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে প্রিন্স তুর্কি আল ফয়সাল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন।
এবার সৌদি আরবের দুই অধ্যাপক, সেলুলার থেরাপিতে সাফল্য অর্জনকারী একজন কানাডিয়ান বিজ্ঞানী এবং কার্বন ন্যানোটিউব নিয়ে কাজ করা এক জাপানি বিজ্ঞানী আরব বিশ্বের সবচেয়ে লোভনীয় এই পুরস্কার জিতেছেন।
বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে, বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কার কমিটির মহাসচিব ড. আবদুল আজিজ আল সেবায়েল বলেন, ‘নানা পর্যালোচনা ও সূক্ষ্ম আলোচনার পর বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কার ২০২৫-এর নির্বাচন কমিটি বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্যাটাগরিগুলো হলো- ইসলামিক স্টাডিজ, চিকিৎসা এবং বিজ্ঞান। আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে যথাযথ মানদণ্ড পূরণ না হওয়ায় এবার পুরস্কার স্থগিত রাখা হয়েছে। আর পঞ্চম ক্যাটাগরি ইসলামের সেবার জন্য পুরস্কার বিজয়ীর নাম চলতি মাসের শেষে ঘোষণা করা হবে।
ইসলামিক স্টাডিজে ‘আরব উপদ্বীপে প্রত্নতত্ত্ব অধ্যয়ন’ বিষয়ে যৌথভাবে পুরস্কার জিতেছেন অধ্যাপক সাদ আবদুল আজিজ আল রাশিদ এবং অধ্যাপক সাইদ ফয়েজ আল রাশিদ। উভয়ই সৌদি নাগরিক এবং কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
চিকিৎসায় পুরস্কার পেয়েছেন (সেলুলার থেরাপি) কানাডার প্রফেসর ডাঃ মিশেল স্যাডেলাইন। ডাঃ স্যাডেলাইন কোষের কার্যকারিতা নিয়ে অভাবনীয় গবেষণা করে এই পুরস্কার জেতেন।
জাপানের মেইজো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুমিও ইজিমাকে বিজ্ঞান বিভাগে পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। তিনি ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি ব্যবহার করে কার্বন ন্যানোটিউব আবিষ্কারের জন্য পুরষ্কার লাভ করেন।
বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কার কমিটি ২০২৫ সালের বিজয়ীদের প্রশংসার পাশাপাশি নির্বাচন কমিটির সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। এবার নির্বাচন কমিটিতে ১৬টি দেশের বিশেষজ্ঞ ও পণ্ডিত অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
১৯৭৭ সালে সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ আলে সৌদের নামে আন্তর্জাতিক মানের একটি পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। ১৯৭৯ সালে প্রথমবারের মতো ইসলামের সেবা, ইসলামিক স্টাডিজ এবং আরবি ভাষা ও সাহিত্যে পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯৮১ সালে চিকিৎসা ও বিজ্ঞান বিভাগ চালু করা হলেও প্রথমবারের মতো চিকিৎসা বিভাগে পুরস্কার ১৯৮২ সালে এবং দুই বছর পর ১৯৮৪ বিজ্ঞান বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়।
১৯৭৯ সাল থেকে বিভিন্ন বিভাগে ৫০টি দেশের প্রায় ৩০০ জন এই পুরস্কার লাভ করেছেন। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে ২১ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
প্রত্যেক পুরস্কার বিজয়ীকে ২ লাখ ডলার, ২০০ গ্রাম ওজনের একটি ২৪ ক্যারেট স্বর্ণপদক এবং সম্মাননা সনদ দেওয়া হয়। যেখানে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম এবং তার অবদানের সারসংক্ষেপ উল্লেখ থাকে।