আমেরিকার ইতিহাসে এবারই প্রথম দু’জন মুসলিম নারী কংগ্রেসের (নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ) সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন- ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভুত রাশিদা তালিব ও সোমালিয় বংশোদ্ভুত ইলহান ওমর। নির্বাচিত দু’জনই ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনে জয় পান এই দুই মুসলিম নারী। তাদের এই বিজয় বিশ্বের গণমাধ্যমে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত এই ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে তাদের নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
ক্রমবর্ধমানভাবে মুসলিম বিদ্বেষ বাড়তে থাকা আমেরিকার মতো একটি দেশের নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থীর জয়লাভ একটি ঐতিহাসিক ব্যাপার। এর আগে প্রথম মুসলিম প্রার্থী হিসেবে মার্কিন নির্বাচনে জিতেছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ কেইথ এলিসন। এলিসন নির্বাচিত হয়ে হাতে পবিত্র কোরআন রেখে শপথ নিয়ে চমক দেখিয়েছিলেন বিশ্ববাসীকে।
৪২ বছর বয়সী রাশিদা তালিব ফিলিস্তিন অভিবাসী বাবা-মার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৮ সালে মিশিগানের আইনসভায় নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে তিনি প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে ইতিহাস গড়েছিলেন।
রাশিদা তালিব কংগ্রেসের ১৩ নম্বর আসন থেকে ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী হিসেবে জয় পান। এর আগে আসনটি ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানদের দখলে ছিল। যৌন সন্ত্রাসের দায়ে দলটি থেকে নির্বাচিত কনিয়ারসকে বরখাস্ত করা হলে আসনটি শূন্য হয়।
মানবাধিকার ও শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে রাশিদা তৈয়বের। এছাড়া ফিলিস্তিনিদের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের বিষয়ে বরাবরই সোচ্চার ট্রাম্পবিরোধী এ রাজনীতিক।
অপরদিকে সোমালিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় ইলহান ওমর ১৪ বছর বয়সে আমেরিকা পাড়ি জমান। তিনি মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় মিনেসোটা অঙ্গরাজ্য থেকে মার্কিন আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ইলহান ওমর নিয়মিত হিজাব পরিধান করেন। তার বিজয়ের মধ্য দিয়ে মার্কিন কংগ্রেস পেলো প্রথম কোনো হিজাব পরিহিত মুসলিম নারীকে।
ইলহান ওমর কংগ্রেসের ৫ নম্বর আসন থেকে জিতেছেন। ওমরের আগে এই আসনে কংগ্রেসের প্রথম মুসলিম প্রার্থী হিসেবে কেইথ এলিসন জিতেছিলেন। রাষ্ট্রীয় অ্যাটর্নি জেনারেল হওয়ার দৌঁড়ে অংশ নিতে গিয়ে তাকে আসনটি ছাড়তে হয়।
আল জাজিরা লিখেছে, এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১শ’ জনের মতো। এর আগের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন মাত্র ১২ জন।
ট্রাম্পের বর্ণবিদ্বেষী নীতির কারণে এবারের নির্বাচনের মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।