ইরাকে মার্কিন বিমানঘাঁটি আইন-আল-আসাদ ও ইরবিল-এ ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড। বুধবার (৮ জানুয়ারি) এ হামলায় ৮০জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইরান। কিন্তু হামলার পর সবাই ভালো আছে বলে টুইট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এদিকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন: ইউরোপীয় ইউনিয়ন মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্রের ব্যবহার অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া ওয়াশিংটন এবং তেহরানের সংলাপ পুনরায় চালুর আহ্বান জানায়।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন লন্ডন যাওয়ার আগে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, এ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
জার্মানি: জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অ্যানগ্রেট ক্র্যাম্প-ক্যারেনবাউর বলেন, তার দেশ সম্ভাব্য আক্রমণ গুলোকে অতিসত্বর বন্ধ করতে আহ্বান জানাবে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এআরডিকে তিনি বলেন, এটি এখন মূলত ইরানিদের ওপর নির্ভর করছে যে তারা এই দ্বন্দ্ব এড়িয়ে যাবে নাকি সংঘর্ষ চালিয়ে যাবে। আর ইরাকে থাকা কোনো জার্মান সেনার ক্ষতি হয়নি বলেও জানান তিনি।
জাপান: ইরাকে মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে হামলার বিষয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজে আবে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলা চলমান অস্থিরতা নিরসনে সর্বোচ্চ কূটনীতিক চেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আবে সামনের সপ্তাহে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান সফর করবেন বলে জানা গেছে।
জাপানের পার্লামেন্টের মুখপাত্র ইয়োশিহিদে সুগা জানান, এখানে অবস্থান করা জাপানি নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই অঞ্চলের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে। এছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কূটনৈতিক আলোচনার জন্য চেষ্টা চালাবে।
ইরাক: ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কোনো ইরাকি বাহিনীর সদস্য আহত বা নিহত হয়নি বলে বিবৃতি দিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।
ব্রিটেন: ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার নিন্দা জানিয়েছে ব্রিটেন। ব্রিটেনের পররাষ্ট্র সচিব ডোমিনিক র্যাব বলেন, আমরা ইরানকে অনুরোধ করছি যেন এ রকম বেপরোয়া ও বিপজ্জনক হামলার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
আরব আমিরাত: সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আনোয়ার গারগাশ বলেন, এই অঞ্চলটিতে বর্তমানে যে উত্তেজনা চলছে, তা থেকে সরে আসা উচিত। আর টুইট বার্তায় তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক পদক্ষেপ অনুসরণ করা উচিত।
পোল্যান্ড: পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মারিউজ ব্লাসজাকাক বলেন, ইরানের হামলায় ইরাকে অবস্থিত কোনো পোলিশ সেনা সদস্য আহত হয়নি। এছাড়া তিনি টুইট বার্তায় বলেন, আমরা ইরাকের পোলিশ মিলিটারি কন্টিনজেন্টের কমান্ডারের সাথে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ করছি।
অস্ট্রেলিয়া: হামলার পরেই অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন জানান, ইরাকে থাকা তার দেশের সকল সৈন্য নিরাপদে রয়েছে। জানা গেছে অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় তিনশ জনের মতো সেনাবাহিনীর সদস্য রয়েছে। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান মরিসন।
ফিলিপাইন: ইরানের হামলার প্রেক্ষিতে ইরাকে অবস্থান করা সকল ফিলাপাইনি নাগরিকদের ইরাক ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ফিলিপাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এডুয়ার্ডো মেন্ডেজ বলেন, ইরাকে চতুর্থ স্তরের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
পাকিস্তান: তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান উত্তেজনার ফলে সকল পাকিস্তানি নাগরিককে ইরাক ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান। এছাড়া ইরাকে অবস্থান করা পাকিস্তানিদের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।
ডেনমার্ক: ইরাকে হামলার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কোনো ডেনিশ সেনা সদস্য আহত বা নিহত হয়নি বলে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে। বর্তমানে ইরাক ও সিরিয়ায় ১৩০ জন সেনা সদস্য রয়েছে।
ভারত: পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভারত তার নাগরিকদের ইরাক ভ্রমণ এড়াতে পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া যারা ইরাকে রয়েছে তাদেরকে সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।