প্রাণীদের একটি আলাদা গুণ হলো প্রভুভক্তি। মালিককে সব সময় মনে রাখে পোষা প্রাণীরা। এমনকি বিপদে কখনো মালিককে ছেড়ে যায় না তারা। আর এমন নজির পৃথিবীতে অনেক। এমন নজিরে অংশ নেওয়া আরও একটি ঘটনা ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে।
সিডনির প্রায় আড়াইশ কিলোমিটার দক্ষিণে বাস করত উইন্টার। সেখানে উইন্টার, তার ছেলে ও এক আত্মীয় একসঙ্গে থাকতো। পরিবারটির সবাই মিলে দাবানল পর্যবেক্ষণ করছিলো।
আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণের বাইরে অস্ট্রেলিয়ার দাবানল
নতুন বছরের শুরুতে উইন্টার তার ছেলে ও আত্মীয়কে সমুদ্র উপকূলে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু সে বাড়িতে থেকে যায়। এক সময় দাবানল নিকটে চলে আসলে সে তার ঘোড়ার পিঠে চড়ে বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু দাবানলের ধোঁয়ার তীব্রতায় সে চোখে কিছুই দেখতে পারছিলো না। এসময় নিজের অসহায়ত্ব বুঝতে পারে উইন্টার। এদিকে ধোঁয়াকে উপেক্ষা করে মালিককে পিঠে চড়িয়ে যেতে শুরু করে ঘোড়াটি। একসময় মালিককে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়।
ঘটনাটির বিবরণ দিতে গিয়ে উইন্টার বলেন, 'আমি কীভাবে এখানে এসেছি আমি জানি না। আমি চারপাশে শুধু কালো ধোঁয়া দেখতে পারছিলাম, আর গরম অনুভব করছিলাম। এই গরম কি সূর্য থেকে আসছে নাকি আগুনের গরম আমি বুঝতে পারছিলাম না। এমনকি আমি কোনো পথ দেখতে পাচ্ছিলাম না। এটা খুব ভয়াবহ মুহূর্ত ছিলো আমার জন্য। কিন্তু ঘোড়াটির (চার্মের) প্রতি অগাধ বিশ্বাস ছিলো। অবশেষে সে আমাকে নিরাপদে পৌঁছে দেয়। সে আমার নায়ক।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার দাবানলে ৫০ কোটি প্রাণীর মৃত্যু!
সেপ্টেম্বর থেকে চলে আসা দাবানলে বিপর্যস্ত অস্ট্রেলিয়া। দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলস, ভিক্টোরিয়া ও সিডনি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই দাবানলে। এখন পর্যন্ত দাবানলে মারা গেছে ২৩ জন। আর এই সপ্তাহেই মারা গেছে বার জন।
এদিকে দিনে দিনে বাড়তে থাকছে দাবানলের পরিধি। যা এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। চলমান এই দাবানলে এখন পর্যন্ত পুড়ে গেছে ৫ মিলিয়ন হেক্টর বনভূমি। মারা গেছে প্রায় ৫০ কোটি প্রাণী।