বিতর্কিত মন্তব্য করতে ওস্তাদ ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সংসদ সদস্য প্রজ্ঞা ঠাকুর। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কথা বলা থেকে শুরু করে উগ্রহিন্দুত্ববাদী মন্তব্য করা নতুন কিছু নয় তার কাছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) ভারতের লোকসভায় বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আবারও বিতর্কের ঝড় শুরু হয়।
এদিন মধ্যপ্রদেশ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য প্রজ্ঞা ঠাকুর মহাত্মা গান্ধীর খুনি নাথুরাম গডসে'কে দেশপ্রেমিক হিসেবে আখ্যা দেন। আর এতেই পার্লামেন্টে শুরু হয় হট্টগোল। বিশেষ সুরক্ষা গোষ্ঠী (সংশোধিত) বিলের ওপর আলোচনার এক পর্যায়ে ডিএমকে নেতা এ রাজা উদ্ধৃতি করে বলেন, 'কেন নাথুরাম গডস গান্ধীকে হত্যা করেছেন?' ওই সময় এ রাজার বক্তব্যে বাঁধা দিয়ে প্রজ্ঞা ঠাকুর বলেন, ‘এমন দেশভক্তের উদাহরণ আপনি দিতে পারেন না।’
এসময় এ রাজা বলেন, ‘নাথুরাম গডসে নিজেই স্বীকার করেছেন, তিনি দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে গান্ধীর বিরুদ্ধে ক্রোধের লালন করেছেন। আর গান্ধীকে হত্যার মাধ্যমেই সেই ক্রোধের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন তিনি।’
বিজেপির মূল সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংস্থার (আরএসএস) বৈষম্যমূলক হিন্দুত্ববাদী আদর্শকে ইঙ্গিত করে এ রাজা উল্লেখ করেন, গডসের একটি বিশেষ আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। এদিকে মালাগাও সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতায় অভিযুক্ত প্রজ্ঞা ঠাকুরের এমন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সংসদের বিরোধী দলগুলো। এবিষয়ে কংগ্রেস থেকে বলা হয়, প্রজ্ঞার বক্তব্যে উঠে এসেছে বিজেপির ন্যক্কারজনক রাজনীতির ছাপ।
তবে প্রজ্ঞার এমন মন্তব্যে অখুশি হয়েছেন বিজেপির হাই-কমান্ড। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নারাজ হয়েছেন তার দলের সংসদের মুখে গান্ধীর খুনির প্রশংসা শুনে। মোদি বলেছেন, 'গান্ধীজীকে নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করা খুবই নিন্দনীয়। কোনো সভ্য সমাজে এ ধরনের মন্তব্য করা যায় না। তিনি (প্রজ্ঞা) হয়তো ক্ষমা চাইবেন কিন্তু আমি তাকে কখনো ক্ষমা করবো না।’
২০১৯ সালের নির্বাচনে ভোপাল থেকে বিপুল ভোটে জয় পাওয়ার পর প্রজ্ঞা ঠাকুরকে বলতে শোনা যায়, তিনি নদর্মা আর টয়লেট পরিষ্কার করার জন্য নির্বাচিত হননি। তার এ মন্তব্যকে দলিত সম্প্রদায়ের প্রতি বর্ণবাদী আচরণ হিসেবে উল্লেখ করেন অনেকে।
তবে গান্ধীর খুনিকে দেশভক্ত বলা নতুন নয় প্রজ্ঞা ঠাকুরের। এর আগে লোকসভা নির্বাচনের সময় প্রচারণা কর্মসূচিতেও গান্ধীর খুনিকে দেশভক্ত হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।