উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে একটি হাসপাতালে ড্রোন হামলার ঘটনায় অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। গত শুক্রবার এই হামলার ঘটনা ঘটে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং আনাদোলু এজেন্সি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সুদানের দারফুর অঞ্চলের এক হাসপাতালে হামলার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ৩০ জন নিহত হওয়ার কথা জানানো হলেও পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭০ জনে পৌঁছেছে। প্রতিশোধের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে একটি সূত্র শনিবার এএফপিকে জানিয়েছে, গতকালের ড্রোন হামলায় আহতদের মধ্যে আজ আরও ৪০ জন মারা গেছেন, যার ফলে নিহতের সংখ্যা ৭০ জনে পৌঁছেছে।
দেশটির আঞ্চলিক গভর্নর মিনি মিনাউই শনিবার তার এক্স অ্যাকাউন্টে রক্তাক্ত মৃতদেহের গ্রাফিক ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, এই হামলায় নারী ও শিশুসহ ৭০ জনেরও বেশি রোগীকে 'নিঃশেষ' করা হয়েছে।
এদিকে সুদানের যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে কোন পক্ষ এই হামলা চালিয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার বোঝা যায়নি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। তারা দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় বিশাল অঞ্চল দখল করেছে। গত মে মাস থেকে উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশার ঘেরাও করে রেখেছে, তবে শহরটি দখল করতে সক্ষম হয়নি। সেখানে সেনাবাহিনী-সংযুক্ত মিলিশিয়ারা তাদের বারবার পিছু হটতে বাধ্য করেছে।
এমন অবস্থায় এল-ফাশারে স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোর ওপরও আক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসা প্রদানকারী দাতব্য ডাক্তাররা এই মাসে বলেছেন, সেখানকার সৌদি হাসপাতালটি এখনও পর্যন্ত একমাত্র সরকারি হাসপাতাল যেখানে অস্ত্রোপচারের সক্ষমতা রয়েছে।
সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশজুড়ে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
সুদানে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। ১ কোটি ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষকে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।