প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকায় আটক জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার চুক্তি নিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছেন।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) একটি প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে এপি।
প্রতিদেনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু চুক্তি সম্পর্কিত একটি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা আহ্বান করবেন এবং তারপরে সরকার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জিম্মি চুক্তি অনুমোদন করবে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ভোরের বিবৃতিতে বলা হয়, এই চুক্তি ইসরায়েল ও গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ থামিয়ে দেবে। একইসঙ্গে ইসরায়েলের হাতে বন্দী ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে গাজায় জঙ্গিদের হাতে বন্দী কয়েক ডজন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পাবে। চুক্তির ফলে লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি গাজায় তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারবে।
তিনি একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্সকে নির্দেশ দিয়েছেন গাজা থেকে ফিরে আসা জিম্মিদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত থাকার জন্য এবং তাদের পরিবারকে এ বিষয়ে অবগত থাকার কথা জানানো হয়েছে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং প্রধান মধ্যস্থতাকারী কাতার ঘোষণার ঠিক একদিন পর নেতানিয়াহুর সরকারী জোটে মধ্যে চুক্তি নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার সূষ্টি হয়। তারা চুক্তিটি বাস্তবায়নের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ নেতানিয়াহুর কার্যালয় হামাসকে ছাড় দেওয়ার পরও হামাস আক্রমণ অব্যাহত রাখে।
গত বৃহস্পতিবার( ১৬ জানুয়ারি) একটি ব্রিফিংয়ে, ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার বলেন, হামাস ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরায়েলি বাহিনী মোতায়েনের সাথে মোকাবিলা করেছে , মিশরের সীমান্তবর্তী সরু স্ট্রিপ যা ইসরায়েলি সেনারা মে মাসে দখল করেছিল।
তবে, ইসরায়েলের দাবি অস্বীকার হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রিশক বলেছেন, জঙ্গি গোষ্ঠী "যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা মধ্যস্থতাকারীদের দ্বারা ঘোষণা করা হয়েছিল।"
মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন "কোনও বিলম্ব ছাড়াই" গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ইসরাইল ও হামাসকে আহ্বান জানিয়েছেন। মিশর বহু বছর ধরে দুটি দেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী এবং চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনায় একটি নেতৃস্থানীয় দেশ।
এদিকে চুক্তি চলমান অবস্থায়ও গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় বৃহস্পতিবার যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলে অন্তত ৭২ জন নিহত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে হামাসের আক্রমণকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল দীর্ঘ ১৫ মাস গাজাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের এসব হামলায় ৪৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু, বৃদ্ধ আর নারী ছিল। আহত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। এছাড়াও হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত। তারা কোন ভাবে অস্থায়ী আশ্রয়ে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।