চীনের নেতা শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে চলতি সপ্তাহে চীন সফর করবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খবরটি রয়টার্সকে মঙ্গলবার (১৪ মে) নিশ্চিত করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
খবর মোতাবেক আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার বেইজিংয়ে থাকবেন পুতিন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেছেন, মাত্র ছয় মাসের মধ্যে এটি হবে রাশিয়ার নেতার দ্বিতীয় চীন সফর এবং গত মার্চে পুনর্নির্বাচনের পর প্রথম বিদেশ সফর।
বিশ্লেষকদের মতে, যেহেতু পশ্চিমারা ইউক্রেন আক্রমণের জন্য নিষেধাজ্ঞার জালে রাশিয়ার অর্থনীতিকে আটকে ফেলার চেষ্টা করছে, সেহেতু একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক লাইফ লাইন হিসাবে চীনের উপর ক্রমবর্ধমান হারে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে মস্কো।
অন্যদিকে, মস্কোর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে যেকোনো সমালোচনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং। বিনিময়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে রাশিয়ার গ্যাসের চালানসহ বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ সস্তায় ভোগ করছে চীন।
কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের পরিচালক আলেকজান্ডার গাবুয়েভ এএফপিকে বলেছেন, ‘রাশিয়া চায় চীন তাদেরকে সমর্থন করার জন্য আরও কিছু করুক, যা চীন করতে অনিচ্ছুক। কারণ, তারা পশ্চিমের সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে ঝুঁকিতে ফেলতে চায় না।’
ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য বেড়েছে এবং মস্কোর আক্রমণের কখনো নিন্দা করেনি বেইজিং।
কিন্তু, মস্কোকে সহায়তা করে এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ওয়াশিংটন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর গত মার্চ এবং এপ্রিলে রাশিয়ায় চীনা রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে।
সিএনএ-এর একজন সিনিয়র রিসার্চ সায়েন্টিস্ট এলিজাবেথ উইশনিক এএফপিকে বলেছেন, ‘চীনা ব্যাঙ্কগুলো উদ্বিগ্ন। কারণ, তারা বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞাগুলি এড়াতে চাইছে। অবশ্যই প্রধান চীনা ব্যাংকগুলো দেশীয়ভাবে বর্তমান অর্থনৈতিক অসুবিধার কারণে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে চাইবে।’
বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, চলতি সপ্তাহের শি-পুতিন বৈঠকে বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে এবং বাণিজ্য বাড়ানোর অঙ্গীকার করা হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ান নেতা পুরোপুরি জানেন যে, বেইজিং মস্কোকে সমর্থন করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কারণ, চীনা নীতিনির্ধারকরা মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্ব ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।