উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশ সুদানের পশ্চিম দারফুরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চলমান সহিংসতার চরম অবনতি ঘটেছে। জাতিগত সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় সুদানে মানবিক সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে বলে গত শুক্রবার জাতিসংঘ এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে।
সামরিক শাসন থেকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রূপান্তরের অংশ হিসেবে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) একীভূত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এতেই দুপক্ষের মধ্যে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে উত্তেজনা বেড়ে যায়।
শনিবার(১১ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি চরম ধ্বংসের দিকে রয়েছে।পশ্চিম দারফুরের আল জুনায়নায় অবস্থিত সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান সেনা ঘাঁটি দখল করেছে আরএসএফ।
সুদানে জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা ক্লেমেন্টাইন এনকোয়েটা-সালামি বলেন, সুদানে যৌন নিপীড়ন, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, জোরপূর্বক গুম, নির্বিচারে আটক, শিশু ও মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং নির্মম ও আতঙ্কজনক পরিস্থিতির ঘটনা ঘটছে।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে খারাপের দিকেই যাচ্ছে। বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এখনও উদ্বেগের প্রধান বিষয়। সুদানের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি, প্রায় আড়াই কোটি মানুষের এখন মানবিক সাহায্য এবং সুরক্ষার প্রয়োজন। ৬০ লাখেরও বেশি নাগরিক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে সুদানের অন্যত্র বা প্রতিবেশী দেশগুলিতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, সংঘাতপূর্ণ এলাকায় ৭০ শতাংশেরও বেশি মানুষ স্বাস্থ্য সুবিধাগুলোর বাইরে রয়েছে। এর ফলে কলেরা, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও হামের প্রাদুর্ভাব এবং শিশুদের মধ্যে উচ্চ মাত্রার অপুষ্টি দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণের কথাও জানান তিনি। পাশাপাশি, আরও ২৬০ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার আবেদনও করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এনকোয়েটা-সালামি বলেন, দারফুরে জাতিগত সহিংসতার ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেড়েছে। বেসামরিকদের ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা এবং আক্রমণ সম্পর্কে উদ্বেগজনক প্রতিবেদন পেয়েছি।
পশ্চিম দারফুরে জাতিগত সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে বলে জানিয়েছে সুদানের নাগরিকেরা।