বিদ্যুৎ আমদানিতে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তিতে সম্মত বাংলাদেশ-নেপাল

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 16:17:34

ঘাটতি পূরণে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানিতে ২৫ বছর মেয়াদি একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে কাঠমান্ডু ও ঢাকা।

নেপাল ইলেকট্রিসিটি কর্তৃপক্ষের (এনইএ) একজন কর্মকর্তা বলেছেন, কাঠমান্ডু ও ঢাকার কর্মকর্তারা দীর্ঘমেয়াদি এই চুক্তির বিষয়ে একমত হয়েছেন। এখন অপেক্ষা শুধু চুক্তি স্বাক্ষরের বলে জানান তিনি।

কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনও আমদানি করা এই বিদ্যুতের যে শুল্ক সে বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা না হলেও, চুক্তির মেয়াদ স্থির হয়েছে।

বিদ্যুতের শুল্ক আরোপের বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে এখনো আলোচনা না হলেও চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশে নেপালের মধ্যে বিদ্যুতের দীর্ঘমেয়াদি বাজার নিশ্চিত হবে।

এনইএ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুল মান ঘিসিং কাঠমান্ডু পোস্টকে বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি বিদ্যুৎ বিক্রয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছি। বাংলাদেশকে দেওয়া আমাদের প্রস্তাব অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ৩১ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত ভারত সফর করেন। সফরে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে আন্তঃসরকার বিদ্যুৎ বাণিজ্য বিষয়ক চুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গেও একই রকম চুক্তি হবে বলে জানিয়েছে কাঠমান্ডু পোস্ট।

এনইএর বিদ্যুৎ বাণিজ্য বিষয়ক পরিচালক প্রবাল অধিকারীর মতে, বিদ্যুৎ খাতে অনিশ্চয়তার কথা তুলে ধরে নেপাল বাংলাদেশকে আগেই একটি প্রস্তাব দেয়। তাতে বলা হয়, নেপাল ৫ বছর মেয়াদি চুক্তি পছন্দ করে।

কিন্তু ঘিসিংয়ের মতে, বাংলাদেশ অবশেষে ২৫ বছরের চুক্তিতে সম্মত হয়েছে, যেটি এখনো স্বাক্ষরিত হয়নি। শুল্ক বাদে, আমরা অন্য সব বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছি, ঘিসিং বলেছেন।

ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রির বিষয়ে নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরের পর এই সমঝোতা আনুষ্ঠানিক হবে।

কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ প্রথমে শুল্ক ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের নিষ্পত্তি করতে চায়। চুক্তির কারিগরি ও বাণিজ্যিক দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং উভয় পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে।

আরও বলা হয়, শুল্কের বিষয়ে সমঝোতা করতে দৃশ্যত এনইএ উন্মুক্ত। ঘিসিং বলেন, শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে আমরা ভাল শুল্ক প্রস্তাবের পরিকল্পনা নিয়েছি। কারণ, চুক্তিটি হবে সরকারের সঙ্গে সরকারের।

বাংলাদেশে বিদ্যুতের বিদ্যমান দামের বিষয় হতে পারে একটি রেফারেন্স। তবে আমরা এখনও এর রেটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিইনি। প্রবাল অধিকারী বলেন, যখন সঞ্চালন চার্জ, সার্ভিস ফির বিষয় আসবে, তখন তা এনটিপিসি বিদ্যুৎ ভাইপার নিগাম লিমিটেডকে (এনভিভিএন) সরাসরি পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে।

ভারত বর্তমানে বিদ্যুতের ক্রেতাদের কাছ থেকে যে চার্জ নিচ্ছে, সেই সমতুল্য চার্জ প্রযোজ্য হবে সঞ্চালনে। তিনি আরও বলেন, লোডসহ সঞ্চালন বিষয়ক অবকাঠামোর প্রযুক্তিগত অবস্থার ওপর নির্ভর করে প্রতি ইউনিটের সঞ্চালন চার্জ ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হতে পারে ভারতীয় মুদ্রায় ৪০ থেকে ৫৫ পয়সা।

ভারতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার জন্য ভারতীয় কোম্পানিগুলো যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে তার জন্য সার্ভিস ফি পরিশোধ করতে হতে পারে বাংলাদেশি সংস্থার। প্রবাল অধিকারী বলেন, এই সার্ভিস চার্জ হতে পারে প্রতি ইউনিট ভারতীয় মুদ্রায় ৪ থেকে ৭ পয়সা। এসব ফি সংগ্রহের দায়িত্বে থাকবে এনভিভিএন।

নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অংশ হবে এনভিভিএন। যাতে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রফতানি করা যায়। একবার নেপাল ও বাংলাদেশ শুল্ক নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছে গেলে, ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পথ প্রশস্ত করবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর