‘শ্রীলঙ্কা আর্থিক সংকটের তথ্য ধামাচাপা দিচ্ছিল’

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-27 02:19:35

শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, দেশটির পূর্ববর্তী প্রশাসন তার পঙ্গু আর্থিক সংকট সম্পর্কে তথ্য ধামাচাপা দিচ্ছিল।

সোমবার (১৮ জুলাই) দেশটির প্রশাসনিক রাজধানী শ্রী জয়াবর্ধনেপুরা কোট্টে পার্লামেন্ট থেকে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন'কে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

রনিল বলেন, সাবেক গোতাবায়া রাজাপক্ষে প্রশাসন সত্য বলেনি। শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল এবং এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহযোগিতা চাওয়া প্রয়োজন ছিল।

আমি বলতে চাই যে আমি জানি দেশের জনগণ কতটা কষ্টে আছেন, বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা অনেক পিছিয়ে গিয়েছি। নিজেদেরকেই নিজেদের টেনে তুলতে হবে। তাতে আমাদের ৫ বা ১০ বছরের বেশি লাগবে না। আগামী বছরের শেষ নাগাদ দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল করে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অবশ্যই ২০২৪ সালের মধ্যে আমাদের অর্থনীতি কার্যকর হয়ে উঠবে।

গত সপ্তাহে সংকট-বিধ্বস্ত দেশ থেকে গোতাবায়া রাজাপক্ষে পালিয়ে যাওয়ার পর পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগে সংবিধান অনুসারে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে গত ১৩ জুলাই শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই তার প্রথম সাক্ষাৎকার।

বিক্রমাসিংহে বলেন, গোতাবায়া রাজাপক্ষে শ্রীলঙ্কা থেকে মালদ্বীপ এবং পরে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পর তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে বিক্রমাসিংহে বলেছেন, সাবেক এই নেতা এখনও সিঙ্গাপুরে আছেন নাকি অন্য কোথাও আছেন তা তিনি জানেন না।

বিক্রমাসিংহে দেশটির পরবর্তী নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হওয়ার আশা করছেন।

আগামী বুধবার (২০ জুলাই) দেশটির পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্তত ৩ প্রার্থীর সঙ্গে ৬ বারের প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহেও এ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

তার মনোনয়ন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে এমন ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।

গত মার্চ থেকে শ্রীলঙ্কা ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মুখে রয়েছে। জ্বালানি, খাদ্য এবং ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে না না পেরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। নেতাদের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে জনগণ।

বিক্ষোভকারীরা বিক্রমাসিংহের ব্যক্তিগত বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে দেশত্যাগ করেন। গত ৯ জুলাই জাতীয় সরকারের পথ তৈরি করতে পদত্যাগ করার অঙ্গীকার করেন রনিল।

তিনি সিএনএনকে বলেন, অগ্নিসংযোগে বাড়ির যা নষ্ট হয়েছে, তার বেশিরভাগই উদ্ধার করা সম্ভব নয়।

তিনি জানান, ৪ হাজারের বেশি বই, যার মধ্যে কয়েক শতাব্দী পুরানো বইও ছিল। একটি ১২৫ বছর পুরনো পিয়ানো আগুনে পুড়ে গেছে।

শীর্ষ পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিজেকে সাবেক প্রশাসনের কেউ নন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি এখানে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে এসেছি।

কেন তিনি প্রেসিডেন্ট হতে চান এমন প্রশ্নে বিক্রমাসিংহে বলেন, আমি চাই না যে দেশে যা হলো তা আবার ঘটুক। আমার সাথে যা হয়েছে তা আমি চাই না যে তা অন্য কারো সঙ্গে হোক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর