নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে খারাপ বছর ২০২১!

ভারত, আন্তর্জাতিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কলকাতা | 2023-08-25 01:43:34

২০১৪ সালের পর ২০১৯ এর ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয়বারর জন্য বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিল নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। সেই হিসেবে ২০২১ সাল ক্ষমতা সাত বছর। চলমান বছরেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে মোদি সরকার।

যদিও মোদি ভক্তরা ক্ষমতার সপ্তমবার্ষিকীর উল্লাস স্যোশ্যাল সাইটগুলোয় পোস্ট করে শেয়ার করেছেন। কিন্তু স্বতঃস্ফূর্তভাবে নেই কোনও আনুষ্ঠানিক উদযাপন। নেই কোনো বিজ্ঞাপন। শুধুমাত্র মোদি শাসনের সপ্তমবার্ষিকী অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে একটি রিপোর্ট করে। সেই রিপোর্টে মোদিকে ‘কোভিড মহামারীতে দৃঢ় ও সংবেদনশীল নেতৃত্বের’ জন্য প্রশংসা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার পর মোদি মোটামুটি অর্ধ বিশ্ব চষে ফেলেছেন। দূর-দূরান্তে প্রতিটা দেশেই ছিল তাকে ঘিরে চরম উন্মদনা। সবচেয়ে স্মরণীয় ছিল হিউস্টনে ‘হাওডি মোদি’ অনুষ্ঠান। এবারও মোদি আশা করেছিলেন যে নিউ ইয়র্কের প্রবাসী ভারতীয়রা তাঁকে সমর্থন করবেন। তবে ২০১৪ সালের মতো সেই অনুষ্ঠানে ভিড় থাকলেও স্বতঃস্ফূর্ততা অনুপস্থিত ছিল।

এর বেশ কিছু কারণও রয়েছে। পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক উদযাপন বাতিল করার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল, সম্প্রতি দিল্লিতে দাঙ্গা, নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের নামে তিন দেশের মুসলমানদের বাদ দিয়ে বাকী ধর্মের শরণার্থীরা ভারতীয় নাগরিকত্বর জন্য এগিয়ে রাখা। এমনকি তিন তালাক তুলে দেওয়া। যা ভারতীয় মুসলমানরা বিপদ হিসেবেই দেখেছেন। যদিও মুসলিম মহিলারা বিষয়টাকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন।

পাশাপাশি কোভিড নিয়েও সমস্যা পড়েছেন মোদি। প্রথম দফায় আচমকা লকডাউন এবং প্রবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগ ভালো চোখে নেয়নি ১৩৫ কোটি ভারতবাসী। শ্রমিকদের হাজার হাজার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যেতে বাধ্য হওয়ার মাঝেই প্রাণহানি ঘটেছে অনেকের। তবুও জানুয়ারিতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামকে দেওয়া এক ভাষণে মোদি বলেছিলেন ভারতে কোভিডকে এমনভাবে পরাজিত করা হয়েছে যা দেখে অন্যান্য দেশ অনুপ্রাণিত হয়েছে। যা শুনে সংশয়ে ছিলেন ভারতবাসীরাই।

এরপর দ্বিতীয় ঢেউয়ে টিকা সমস্যা, পশ্চিমবাংলার শত ক্ষমতা প্রয়োগ করেও ভোটে পরাজয়। এর সাথে কোভিডের ভ্রুক্ষেপ না করেই কুম্ভমেলায় সম্মতি দেওয়া, কোভিড আবহে পশ্চিমবঙ্গে ভোটে প্রচার, গঙ্গায় শয়ে শয়ে শবদেও ভেসে আসা, লাগাতার জ্বালানি তেলের মুল্যবৃদ্ধি, করোনা রোগীদের ওষুধ-অক্সিজেনের সংকট। এছাড়া কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের আন্দোলন ইত্যাদি মিলিয়ে ভারত যে ভয়াবহ সঙ্কটের মুখোমুখি সেখানে মোদি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

রাজনৈতিক কেরিয়ারে এমন খারাপ বছর সাম্প্রতিক সময়ে দেখেননি নরেন্দ্র মোদি। ভারতসহ বিশ্বের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। সম্ভবত সে কারণেই উদযাপন বন্ধ রেখেছেন মোদি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর