ইউরোপের দেশগুলোতে করোনাভাইরাসে ১০ মিলিয়নের অধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। শুক্রবার (৩০ অক্টোরব) আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেস (এপি) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাতে এ খবর জানিয়ে বলেছে, করোনার দ্বিতীয় আঘাতে মহাদেশের বর্ণিল শহরগুলো আবার জনশূন্য ও বিবর্ণ হয়ে গেছে।
এপি'র স্টাফ ফটোগ্রাফার মাইকেল পোবস্টের তোলা একটি আলোকচিত্রে নিথর নগরের পটভূমিকায় একজন বিমর্ষ নাগরিকের উপস্থিতিতে ভূতুড়ে পরিস্থিতির লক্ষণ স্পষ্টতর দেখা গেছে। ইউরোপের এক কোটি আক্রান্তের আশঙ্কাজনক সংখ্যার পাশাপাশি মহামারির নতুন ও শক্তিশালী আঘাতের ভীতি রয়েছে।
গত কয়দিনে যে দ্রুতলয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, সে গতি অব্যাহত থাকলে বিপদ তীব্রতর হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। প্রতি সপ্তাহেই সংখ্যাটি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন রেকর্ড করছে। সে সঙ্গে বাড়ছে বিভিন্ন কঠোরতাও। যার মধ্যে রয়েছে কারফিউ, লকডাউন ও জনসমাগম বন্ধের ঘোষণা।
করোনায় বিপর্যস্ত জার্মানির চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেল সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, 'সামনেই কঠিন শীতকাল আসছে। শৈত্য নয়, করোনাই আসন্ন শীতকালকে ভয়ঙ্কর করে তুলবে।'
ফ্রান্সের নাগরিকগণও করোনা সংক্রামণ বৃদ্ধির পটভূমিতে দীর্ঘমেয়াদি লকডাউনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছেন। স্পেনের পার্লামেন্টে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে ভোট পড়েছে।
চেক রিপাবলিক, ইতালি ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশেও নানা ধরনের সতর্কতা অব্যাহত রয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বিরামহীনভাবে কাজ করছেন। আর অনেক ব্যবসায়ীই দোকানপাট গুটিয়ে নিয়েছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতেও করোনায় মৃত্যের সংখ্যা বৃদ্ধির হার ঊর্ধমুখী। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কলাম্বিয়ায় আবার নতুন করে আক্রান্ত ও মৃত্যের সংখ্যা বাড়ছে। সেসব দেশে মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতিতে অনেক জায়গায় মৃতদেহ গণকবর দেওয়া হচ্ছে। কোথায় লাশ পুড়িয়ে ফেলারও খবর পাওয়া গেছে।
জাপান বিগত নয় মাসে এক লাখ আক্রান্তের সংখ্যা স্পর্শ করেছে। মধ্য-জানুয়ারিতে জাপানে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়েছিল। কঠোর ব্যবস্থায় মৃতের হার কমিয়ে রাখা গেলেও আক্রান্তের সংখ্যা কমানো যায় নি। তবে জাপানে আক্রান্তদের করোনা থেকে সেরে উঠার হার অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
ভারত আট মিলিয়নের অধিক আক্রান্ত নিয়ে করোনার বিপজ্জনক হটস্পটে পরিণত হয়েছে, যেখানে দৈনিক গড় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮,৬৪৮ জন। মারাত্মক পরিস্থিতি বিরাজ করছে মহারাষ্ট্র ও দক্ষিণের কয়েকটি অঞ্চলে।