চলচ্চিত্রে তার শুরুটা হয়েছিল শিশুশিল্পী হিসেবে—যদিও সেই ছবিটি এখনো মুক্তি পায়নি। তাঁর দ্বিতীয় ছবির কাজও মাঝপথে এসে থেমে যায়। এরপর রাজ্জাক ও ববিতাকে নিয়ে জহির রায়হান তৈরি করেন চলচ্চিত্র ‘শেষ পর্যন্ত’। এটিই ছিল তাঁর প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। এরপর থেকেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের এ নক্ষত্রের উত্থান। এখন আর চলচ্চিত্রে কাজ না করলেও তাঁর অভিনয়গুণের আলোয় উজ্জ্বল চলচ্চিত্রাঙ্গন। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের খ্যাতনামা অভিনেত্রীর জন্মদিন আজ।
বিশেষ এই দিনটিতে ভক্ত ও শুভাকাঙ্খীদের থকে শুভকামনা পাচ্ছেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ববিতার সঙ্গে তোলা একটি ছবি শেয়ার করে এক দীর্ঘ পোস্টের মাধ্যমে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন চিত্রনায়ক শাকিব খান।
তিনি লিখেছেন- “যে কোনো পেশাতেই চড়াই উৎরাই থাকে। কিন্তু পরামর্শ দেয়ার সঠিক মানুষটি পেলে চড়াই উৎরাই মোকাবিলা করা যে কারো জন্য সহজ হয়ে যায়। অভিনয় পেশার শুরু থেকে আমি তেমন কিছু গুরুজন পেয়েছি, যারা আমাকে সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পরামর্শ দিয়ে গেছেন। অভিনয় শূন্য থেকে শুরু করেছিলাম; কিন্তু তাদের স্নেহ-মমতা আর আশীর্বাদের শীতল পরশ সঙ্গে ছিল বলেই আমি আজকে সবার কাছে শাকিব খান।”
শাকিব আরও লিখেছেন- “অভিনয়ে আসার পর যে কজন অভিভাবক পেয়েছি, তাদের অন্যতম ববিতা ম্যাডাম। তাঁর মতো এমন অভিজ্ঞ, দক্ষ অভিনয় শিল্পী মাথার উপর ছায়া হয়ে থাকলে সব কিছুই সহজ হয়ে যায়। অনস্ক্রিনে অসংখ্যবার দর্শক তাকে আমার মায়ের ভূমিকায় দেখেছেন, অথচ অফস্ক্রিনেও তিনি আমার কাছে তেমন একজন মমতাময়ী মা।”
শাকিবের মতে, “দেশের সিনেমাপ্রেমী মানুষের কাছে তো বটেই, বিশ্ব সিনেমার ইতিহাসেও যার নাম ডাক। কমার্শিয়াল সিনেমার পাশাপাশি ভিন্নধারার সিনেমাতেও তিনি ছিলেন স্বতঃস্ফূর্ত। তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হননি এমন প্রজন্ম খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেই সত্তরের দশকেই ববিতা ম্যাডাম বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে ঘুরেছেন। বাংলা সিনেমার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেই সময়ে দেশের সব গুণী নির্মাতাদেরও পছন্দের তালিকায় ছিলেন আমাদের ববিতা ম্যাডাম। কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের মতো পৃথিবীখ্যাত নির্মাতার সিনেমাতেও।”
কিছুটা আক্ষেপের সুরে শাকিব বলেন, “বহুদিন তিনি সিনেমা থেকে দূরে। তাঁর সাথে আমার প্রায়ই কথা হয়। বর্তমান সিনেমার খোঁজ খবর নেন। আগের মতোই মমতাময়ী মায়ের কণ্ঠে সঠিক দিকনির্দেশনা দেন। তাঁর মতো গুণী অভিনয়শিল্পীর সাথে কথা বলতে বলতে মাঝেমধ্যে নিজেদের ব্যর্থতার কথাগুলোও স্মরণ করি। ষাট, সত্তর, আশির দশকে পাশের দেশের সিনেমার অভিনেতা অভিনেত্রীদের ঘিরে কতো কতো সিনেমা নির্মিত হচ্ছে; অথচ ববিতা ম্যাডামদের মতো গুণী অভিনয়শিল্পীদের আমরা পরবর্তীতে আর ব্যবহারই করতে পারলাম না! তাদের জন্য যুঁতসই গল্প-চরিত্র নির্মাণ করতে পারলাম না! হয়তো এসব আফসোসও একদিন ঘুঁচবে। অন্তত ববিতা ম্যাডামের জন্মদিনে এমন প্রত্যাশাই জানিয়ে রাখলাম। প্রিয় অভিনেত্রী, মাতৃতুল্য অভিভাবক ববিতা ম্যাডামের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি ... শুভ জন্মদিন ...”