দরপতনের মাসেও নতুন বিনিয়োগকারী পৌনে ৯ হাজার

পুঁজিবাজার, অর্থনীতি

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-23 18:09:38

চলতি বছরের মার্চ মাসে পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগকারী এসেছেন মাত্র ৮ হাজার ৭৫৬জন। ফেব্রুয়ারি মাসের এসেছিল ১৮ হাজার ৬৭জন। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১০ হাজার বিনিয়োগকারী কম এসেছেন মার্চ মাসে।

বিনিয়োগকারীদের শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সিডিবিএল বলছে, তিন মাসে ১ লাখ ১৬ হাজার ১২১ জন বিনিয়োগকারী এসেছেন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে এসেছেন ৮৯ হাজার ২৯৮ জন আর ফেব্রুয়ারি মাসে এসেছেন ১৮ হাজার ৬৭ জন নতুন বিনিয়োগকারী। এরপরের মাস মার্চে এসেছেন ৮ হাজার ৭৫৬ জন বিনিয়োগকারী।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর জানুয়ারি মাসের প্রায় সবদিন চাঙ্গা ভাবের মধ্য দিয়ে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। ফলে সূচক, লেনেদেন ও বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বেড়েছে।

এসবের ফলে ২০১০ সালের ধস পরবর্তী বিনিয়োগকারীদের হারানো অনেক পুঁজি ফিরে পেতে শুরু করেন। তাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন করে পুঁজিবাজারমুখী হন বিনিয়োগকারীরা। ফলে ৮৯ হাজার বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব বেড়েছে।

কিন্তু জানুয়ারির শেষের দিকে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের মুদ্রানীতি ঘোষণার পর থেকে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বেশির ভাগ সময় লেনদেন হয় সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায়। ফলে এ দুই মাসে নতুন করে বিনিয়োগকারী কম এসেছে।

বিনিয়োগকারীদের তথ্য সংরক্ষণকারী এ প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি দেশি-বিদেশি, পুরুষ-মহিলা উভয় প্রকার বিনিয়োগকারীদের মোট বিও হিসাব ছিল ২৭ লাখ ২৮ হাজার ৭৯৭টি। সেই অবস্থা থেকে গত তিন মাসে এক লাখ ১৬ হাজার ১২১টি বিও হিসাব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৯১৮টিতে।

তিন শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর মধ্যে পুরুষ বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা ৪৯ হাজার ২২১টি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৭৬ হাজার ২২৬টিতে। আর নারীদের সংখ্যা ১৬ হাজার ৩৫৭টি বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৫৫ হাজার ৬২১টি।

অন্যদিকে আবাসিক বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৬১ হাজার ৭৪৯টিতে। আর অনাবাসিক বিনিয়োগকারীর স্যংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার ৯৮টিতে।

এছাড়াও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা ৩৯হাজার ৩৯০টি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯১টি। জয়েন্ট বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ২৫ হাজার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৪৫ হাজার ১৫৬টিতে।

কোম্পানির বিও হিসাবের মধ্যে নিয়মিত বিও ক্যাটাগরিতে ১১ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪০টি। ক্লিয়ারিং বিওর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫০টি, প্রিন্সিপাল বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ৪৯০টি এবং অমনিবাস বিও হিসার দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭১টিতে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভালোভাবে সম্পূর্ণ হয়েছে। এখন বাজার ভালো হবে, দু’টাকা লাভ পাবে এমন প্রত্যাশায় জানুয়ারি মাসে কিছু বিনিয়োগকারী বাজারে এসেছে। কিন্তু ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বাজার খারাপ থাকায় ক্রমাগতভাবে নতুন বিনিয়োগকারী আসার সংখ্যা কমছে।

যে দু’একজন আসছে প্রাইমারি মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য; সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য নয় বলেও মন্তব্য করেন শাকিল রিজভী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর