সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং দুর্যোগকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে নগদের কর্মীদের একদিনের বেতন বানভাসী মানুষের সহায়তা প্রদানে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক। পাশাপাশি চলতি মাসে নিজের বেতনের সম্পূর্ণ অংশ দুর্যোগ মোকাবিলায় অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ আয়োজিত ‘মানুষ বাঁচলে দেশ বাঁচবে' শীর্ষক এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ‘নগদ’ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক এই ঘোষণা দেন। ‘নগদ’-এর চিফ পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অফিসার সোলায়মান সুখনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট আহমেদ ইমতিয়াজ জামি এবং গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও সহপ্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ মিঠু।
প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ‘নগদ’-এর সকল কর্মীদের একদিনের সমপরিমাণ বেতন বন্যার বিপর্যয় মোকাবিলায় অনুদানের ঘোষণা দেন তানভীর এ মিশুক। এ ছাড়া সামাজিক দায়বদ্ধ করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে পৃথকভাবে প্রতিষ্ঠানের বিগত দুই মাসের নিজেদের লেনদেনের লভ্যাংশের সম্পূর্ণ অংশ সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা কবলিত এলাকায় অনুদানের ঘোষণা দেন তিনি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, এই উদ্যোগ আমার একার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব হতো না। আমি ‘নগদ’-এর সকল কর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দেশের দুর্যোগকালীন সময়ে মহৎ এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। দেশের বিপর্যয়ে ‘নগদ’-এর বিগত দুই মাসের রাজস্বের সম্পূর্ণটিই আমরা অনুদান দিয়ে ভুক্তভোগী মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমার বিশ্বাস আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস কিছুটা হলেও তাদের দুর্ভোগ মেটাতে সাহায্য করবে।
সিলেট ও সুনামগঞ্জে ‘নগদ’-এর উদ্যোক্তাসহ রিজিওনাল সকল কর্মীরা তাৎক্ষণিক সব ধরনের লেনদেনের সহায়তা দিয়ে বন্যাকবলিত ‘নগদ’ উদ্যোক্তাসহ সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। বন্যাকবলিত এসব এলাকায় আর্থিক সেবা নিতে সশরীরে ব্যাংকে যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মোবাইল ওয়ালেটে লেনদেনের প্রবণতাও বেড়েছে।
'মানুষ বাঁচলে দেশ বাঁচবে' শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে ‘নগদ’-এর পক্ষ থেকে সর্বস্তরের মানুষকে বন্যার এই দুর্যোগ মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে আহ্বান জানানো হয়। ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক আরও বলেন, বাঙালি জাতি যেকোনো দুর্যোগে মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে। বাংলাদেশ সরকার দেশের সবধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় নিরন্তরভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই সিলেট ও সুনামগঞ্জের এই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষ যাতে এগিয়ে আসেন।
অনুষ্ঠানে অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট আহমেদ ইমতিয়াজ জামি এবং গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও সহপ্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ মিঠু নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচিগুলো তুলে ধরেন এবং ‘নগদ’-এর ডোনেশন অপশনের মাধ্যমে এ পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ অনুদান প্রদান করেছেন বলে জানান।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দেশের যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছে ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’। ২০২০ সালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সাথে যৌথভাবে করোনা মহামারীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ৬০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে ‘নগদ’।
সিলেট অঞ্চলে বন্যার্তদের সহযোগিতা করতে প্রায় ৫০টিরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানে ‘নগদ’-এর মাধ্যমে অনুদান প্রদান করা যাচ্ছে। আগ্রহী যেকোনো ‘নগদ’ গ্রাহক সহজেই ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট থেকে ডোনেশন অপশনে প্রবেশ করে সরাসরি অনুদান প্রদান করতে পারছেন।