মহামারি করোনা পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে রফতানি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হলেও রফতানি আয় বৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি অর্থবছরের দশম মাস এপ্রিলে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে ৪৭৩ কোটি ৮৭ লাখ (৪.৭৪ বিলিয়ন) ডলার বিদেশি মুদ্রা এনেছেন বাংলাদেশের রফতানিকারকরা। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫১ শতাংশ।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি কয়েক মাসের ইতিবাচক ধারা বজায় রেখে সর্বশেষ মার্চের ৩০ দিনে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি করে ৪৭৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫১ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি। গত ২০২০-২১ অর্থবছরের এপ্রিলে ৩১৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছিল। রফতানিতে এ আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৩৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে জ্বালানির দাম। জাহাজভাড়াসহ বিশ্ববাণিজ্যে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের রফতানি খাতে যুদ্ধের প্রভাব পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করা হলেও তা এখনও পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি।
ইপিবির পরিসংখ্যান বলছে, রফতানিতে পোশাকের আধিপত্য বজায় রয়েছে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ৩ হাজার ৫৩৬ কোটি ২৫ লাখ ডলারের পোশাক পণ্য রফতানি হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই আয় ২১ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি।
গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল এ ১০ মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে হিমায়িত মৎস্য রফতানি করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ, কৃষিপণ্যে ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ, ম্যানুফ্যাকচার পণ্যে ৩৫ দশমিক ৬১ শতাংশ, কেমিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যে ৪৫ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে ৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এছাড়া চামড়াজাত পণ্যে ৩২ দশমিক ৯৭, কুটির শিল্পে ৩০ দশমিক ২৪ শতাংশ, সিরামিক পণ্যে ৩৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
তবে, গত কয়েক মাসের মতো রফতানিতে নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে পাট ও পাটজাত পণ্য। এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে পাট খাতের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ পিছিয়ে আছে। পাট ও পাটজাত পণ্য খাত থেকে রফতানি হয়েছে ৯৬ কোটি ৬৫ লাখ ডলার।