প্রতিটি উৎপাদিত পণ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হয় লক্ষ্যমাত্রা। অর্থাৎ কি পরিমাণ কৃষিপণ্য উৎপাদিত হবে বা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ‘চা’ এর ক্ষেত্রেও এমন লক্ষ্যমাত্রা ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশের চা’কে পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশ চা বোর্ড (বিটিবি)।
বাংলাদেশ চা বোর্ড (বিটিবি) কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের চা উৎপাদনের চূড়ান্ত ঘোষণা এখনও করেনি। তবে চলতি মাসের মাঝামাঝিতেই সেই প্রতীক্ষিত চূড়ান্ত ঘোষণা আসার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের শুরুতে দেশের ১৬৭টি চা বাগান থেকে চায়ে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন (অর্থাৎ ৭ কোটি ৭৮ লাখ) কেজি। সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার চট্টগ্রাম ও পঞ্চগড়সহ সারাদেশে চা বাগান রয়েছে ১৬৭টি। এছাড়া উত্তরবঙ্গ এবং বান্দারবানে চা চাষের সাথে সম্পৃক্ত আছে আরও ৫ হাজার ক্ষুদ্র চাষি। সারা বাংলাদেশে এই খাতে মোট ৩ লক্ষাধিক শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে।
চা বোর্ডের উৎপাদনের রেকর্ড অনুযায়ী, ২০২০ সালে দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার কেজি, উৎপাদন হয়েছিল ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার কেজি। ২০১৯ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ কোটি ৪১ লাখ ৪০ হাজার কেজি। উৎপাদন হয় ৯ কোটি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার কেজি। ২০১৮ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৯০ হাজার কেজি। উৎপাদন হয় ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার কেজি।
২০২১ সালে চা এর সামগ্রিক উৎপাদন সম্পর্কে কথা বলতে গেলে নাম-পদবি না প্রকাশের শর্তে বিটিবি’র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমরা মনে করছি ২০২১ সালে ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২১ সালে দেশের ১৬৭টি চা বাগান থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭৭ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন কেজি। জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চা উৎপাদন হয় ৩৮ দশমিক ৩১ মিলিয়ন কেজি। লক্ষ্যমাত্রার ৫০ ভাগের অনেক বেশি চা উৎপাদন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, করোনাকালে চা শিল্পের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখা হয়েছিল বাগানগুলোয়। সে সুফল মিলেছে উৎপাদনে। বছরের দুই মাস হাতে রেখেই এবার বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। বাগান সম্প্রসারণ, নতুন করে বিনিয়োগ এবং বাগান উন্নয়নে বাগান মালিকদের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে চা উৎপাদন বেড়েছে।
সব কিছু ঠিক থাকলে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০০ মিলিয়ন কেজি চা পাতা উৎপাদন হবে। যা হবে দেশে চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড। ২০২১ সালে চা উৎপাদনের যাবতীয় তথ্যাবলী বিশ্লেষণ করে চা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ঘোষণা পেতে আমাদের চলতি বছরের জানুয়ারি দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে, তিনি জানান।