চায়ের আড্ডায় ভোট: নিজের সিল নিজেই মারতে চান ভোটাররা

, যুক্তিতর্ক

সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী | 2024-01-03 21:33:03

 

আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। পছন্দের প্রার্থীর পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে মাঠে ময়দানে, এখানে-ওখানে।

চায়ের দোকানে আড্ডায় জমজমাট ভোটের আলোচনা, সে বাঙালির এক প্রিয় অভ্যাস। শীতের কুয়াশায় চাদর মুড়িয়ে থাকা ভোরে শীতের চাদর মুড়িয়ে মানুষের আসেন চায়ের দোকানে। আর সেখানে চায়ের চুমুকে চুমুকে তারা ভোট নিয়ে কথা বলেন। তাতে তর্ক-বিতর্ক থাকে। থাকে নানা হিসাব-নিকাষ। কখনো কখনো সে আলোলচনা সমালোচনায় রূপ নেয়। তর্কাতর্কিতেও গড়ায়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। নির্বাচন নিয়ে চায়ের আড্ডা চোখে পড়ে রাজবাড়ির বিভিন্ন স্থানে- আনাচে কানাচে। বুধবার (৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজবাড়ী-২ (পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী) আসনের বিভিন্ন স্থান ঘুরে চায়ের দোকানগুলোতে এমনই চিত্র দেখা যায়।

বালিয়াকান্দির জামালপুর, সোনাপুর ও নারুয়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দিনের আলো ফোটার সাথে সাথে ভিড় জমতে থাকে চায়ের দোকানগুলোতে। বৃদ্ধ থেকে শুরু করে তরুণ ভোটাররা নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় মেতে ওঠে। যার যার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে থাকে। আড্ডাগুলো পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোনায় একটি বিষয় সাধারণ হিসেবে পাওয়া যায়। তা হচ্ছে- সকল ভোটারদের মুখেই একই প্রশ্ন- তাদের ভোট তারা দিতে পারবেন তো?

এবারের ভোটে সবাই নিজের ভোটের ছিল নিজেই মারতে চান, চায়ের আড্ডায় সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে দেখা গেছে।

বালিয়াকান্দি বাজারের করিমের চায়ের দোকানে কথা হয় বৃদ্ধ আজগর আলী শেখের সাথে। তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, তার বয়স এখন সত্তর বছরের ওপড়ে। জীবনে আর ভোট দিতে পারবেন কিনা জানেন না। তাই এবার তিনি তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে চান। ভোটের দিন তিনি কেন্দ্রে যাবেন। নিজের ভোটটা যেন তিনি দিতে পারেন সেজন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এবছরই নতুন ভোটার হয়েছেন বালিয়াকান্দি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আবীর আহমেদ। বার্তা২৪.কমকে জানালেন, তিনি এবার প্রথম ভোট দিবেন। মনের মধ্যে এক ধরণের আনন্দ বিরাজ করছে। তবে আবীরের আস্থা রয়েছে, তিনি নিজেই নিজের ভোটটি দিতে পারবেন। অন্য কেউ তার ভোট দিয়ে দেবে এটা তিনি ভাবতেও পারছেন না।

তরুণ ভোটাররা ভোট নিয়ে কি ভাবছে? এমন প্রশ্নে আবীর বলেন, দেশের উন্নয়নে যারা কাজ করেছে, শিক্ষাখাতে উন্নয়ন করেছে, কাজের বাজার সৃষ্টি করেছে ভোট তারাই পাবে।

এ প্রসঙ্গে কথা হচ্ছিলো রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার আবু কায়সার খানের সঙ্গে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। এবং নির্বাচন কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ইতোমধ্যে তিনি নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের দিনব্যাপী নির্বাচনী প্রশিক্ষণে কঠিন হুশিয়ারি দিয়েছেন। সেই সাথে নির্ভয়ে নিষ্ঠার সাথে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে সকলের প্রতি তিনি আহবান জানিয়েছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ থেকে মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. জিল্লুল হাকিম (নৌকা), তৃণমূল বিএনপির এস এম ফজলুল হক (সোনালী আঁশ), স্বতন্ত্র প্রার্থী নূরে আলম সিদ্দিকী (ঈগল), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) মো. আব্দুল মতিন মিয়া (মশাল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. আব্দুল মালেক মন্ডল (ছড়ি) ও জাতীয় পার্টির মো: শফিউল আজম খান (লাঙল)।

এ সম্পর্কিত আরও খবর