ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে জন্ম নেওয়া ‘লালমনি’কে দেখতে তার বাড়িতে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের বাড়িতে যান তিনি। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আহমেদ তার সঙ্গে ছিলেন।
অভাবের তাড়নায় লালমনির বাবা ছকমাল মিয়া-মা নবিয়া বেগমকে নিয়ে প্রায় ২ বছর আগে ঢাকায় যান। স্ত্রী নবিয়া নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। স্বামী দিনমজুরের কাজ পেয়ে একইসঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। ঢাকার ক্লিনিকে সন্তানসম্ভবা স্ত্রী’র অপারেশন করার মতো স্বামীর সামর্থ্য নেই। তাই সিদ্ধান্ত হয় গ্রামে গিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করবেন স্ত্রীকে।
আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনে জন্ম, নাম তার ‘লালমনি’
রোববার স্বামী-স্ত্রী দুজনই টিকিট কেটে লালমনিরহাটগামী আন্তঃনগর ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে উঠেন। ট্রেনেই নবিয়ার প্রসব ব্যথা ওঠে। কান্নাকাটি করতে থাকেন, তখন ট্রেন পাবনার ঈশ্বরদী এলাকায়। গভীর রাতে আশপাশে ট্রেন থামার মতো কোনো রেলস্টেশন ছিলো না। এক পর্যায়ে ভোর ৪টার দিকে একটি ফুটফুটে শিশুর জন্ম হয়।
সোমবার সকালে বগুড়া স্টেশনে আন্তঃনগর ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি পৌঁছায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সন্তানসহ প্রসূতিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। টানা ৫ দিন চিকিৎসার পর শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে গ্রামের বাড়িতে এলে বাড়ি লোকজন প্রসূতি মা ও সন্তানকে বরণ করে নেয়। সেখানে শিশুটির নাম রাখা হয় ‘ইব্রাহীম হোসেন লালমনি’।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, জেলার ও ট্রেনের প্রতি ভালোবাসা দেখে আশ্চর্য হয়েছি। জেলার সঙ্গে মিল রেখে নাম রেখেছে ‘লালমনি’। যার কারণে পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ আমরা। শিশুটির পরিবারকে দেখে শুকনো খাবারসহ ১০ হাজার টাকা নগদ প্রদান সহয়তা করা হয়েছে।