মাঘের কনকনে শীত উপেক্ষা করে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চলের কৃষকরা। কয়েক দিনের ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে বোরো ধানের চারা রোপণে কিছুটা দেরি হয়েছে কৃষকদের। কোল্ড ইনজুরিতে নষ্ট হয়েছে বোরো বীজতলা।
তবে শীত ও কুয়াশা কমে যাওয়ায় এখন পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো ধান লাগানোর কাজ। দিনভর ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। চাটমোহরের চলনবিল অঞ্চলে এখন বোরো ধানের চারা তোলা, পানি সেচ দেওয়া, জমি তৈরি আর চারা রোপণের হিড়িক লেগেছে। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত কৃষক। সকাল ও দুপুরের খাবার মাঠে খাওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে চলনবিল অঞ্চলে বোরো আবাদের উৎসব শুরু হয়েছে।
তবে হঠাৎ সারের দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় এবং কৃষি শ্রমিক সংকটের কারণে শংকিত কৃষকরা। এ অবস্থায় বোরো আবাদে চাষিদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন কৃষি বিভাগের কর্মীরা।
স্থানীয় কৃষক আলিম হোসেন জানান, এখান আমাদের নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই। বোরো আবাদ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত আমরা। আবাদ করা ছাড়া তো আমাদের চলে না। কিন্তু ধানের বীজ তোলা ও জমিতে লাগানোর জন্য প্রয়োজনমতো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। সময়মতো শ্রমিক না পেলে ধান লাগাতে দেরি হয়ে যাবে। ফসল ভালো পাবো না, তাই চিন্তায় আছি। যাও দু’একজন পাওয়া যাচ্ছে তারা বেশি পারিশ্রমিক চাচ্ছেন।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৮ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোপণ করা জমির মধ্যে উন্নত ফলনশীল উফশী ও হাইব্রিড ধান রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আবাদ হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, শীতের কারণে বোরো আবাদ কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হবে। চলনবিল অঞ্চলে এবার প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোল্ড ইনজুরির কারণে বীজতলা নষ্ট হওয়ায় বোরো চারা সঙ্কটের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। যদিও কৃষি বিভাগ বলছে, চারার কোনো সংকট হবে না। কৃষি বিভাগ ক্ষেতে ক্ষেতে সুতা টেনে চারা রোপণের কৌশল শিখিয়ে দিচ্ছেন।
আসাদুজ্জামান জানান, সঠিক বয়সের চারা ১০ লাইন পর পর ১ লাইন ফাঁকা রেখে চারা রোপণ করলে আলো, বাতাস পাবে, কমবে ইঁদুরের উপদ্রব। পরিচর্যাও করা যাবে সঠিকভাবে। ফলন বাড়বে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ‘লোগো’।