করোনা সময়ে নিউ নরমাল পরিবেশে উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশীয় সামাজিক সমস্যার সমাধান যথেষ্ট গুরুত্ব পাবে। বৃহৎ আকারে সামাজিক সুবিধা নিশ্চিতে স্থানীয় স্টার্টআপদের সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে গ্রামীণফোন।
২০১৯ সালের নভেম্বরে শুরু হওয়া কর্মসূচি শেষে অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রামের ষষ্ঠ ব্যাচের স্টার্টআপগুলোর জন্য প্রথমবার ‘ভার্চুয়াল ডেমো ডে’ আয়োজন করে গ্রামীণফোন।
এতে শতাধিক দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিশেষজ্ঞ, একাডেমিক এবং গ্রামীণফোন ও সিড স্টারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনে নিজেদের ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন করে গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রামের নির্বাচিত আটটি স্টার্টআপ।
এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এমন কঠিন সময়ে এটি সত্যিই একটি ইতিবাচক উদ্যোগ। আমি বিশ্বাস করি কোভিড-১৯ এ অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে। তাই ব্যবসা কৌশলও পরিবর্তন করতে হবে। যার মূল চালিকা শক্তি হবে ডিজিটাইজেশন।
সব উদ্যোক্তাকে ধন্যবাদ জানাই। এরাই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে যথার্থ ভূমিকা রাখবে। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সিড স্টারকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের উদ্ভাবনী চিন্তাধারা বাস্তবায়নে এ ধরনের উদ্যোগ দারুণ সহায়ক বলে জানান মোস্তাফা জব্বার।
দেশি স্টার্টআপের সহায়তার প্রশ্নে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, প্রতিভাবান তরুণদের অংশগ্রহণ ও উপস্থিতি অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রামটি অত্যন্ত উৎসাহমূলক। চারপাশের সামাজিক সমস্যা কীভাবে দ্রুত সমাধান করা যায়-তা বের করতে উদ্ভাবক ও পরিবর্তনশীল সৃষ্টিশীলতা আমাদের সহায়তা করছে।
ডিজিটালাইজেশানে সম্ভাবনা উন্মোচনে অবদান রাখতে সমাধান বের করা, নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য আমি প্রযুক্তি বান্ধব উদ্ভাবকদের ধন্যবাদ জানাই। উদ্ভাবনাগুলোকে উৎসাহ দিতে সবার এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে করোনা সময় মোকাবিলায় যখন নিত্যনতুন সেবা উদ্ভাবন সবচেয়ে বেশি জরুরি বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, একই সাথে দেশের প্রতিটি পর্যায় থেকে সবার অবদান এবং সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি ভবিষ্যৎ হবে প্রযুক্তিনির্ভর। নিত্যনতুন উদ্ভাবনের ওপর নির্ভর করেই আমরা কঠিন সময়ের সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারব।
গ্রামীণফোনের চিফ ডিজিটাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি অফিসার সোলায়মান আলম বলেন, অভূতপূর্ব সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। বৈশ্বিক মহামারির কারণে গত কয়েক মাস থেকে বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম প্রতিকূল সময় পার করছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আটটি স্টার্টআপের প্রবৃদ্ধি ও তাদের সফল পারফরমেন্সের ক্ষেত্রে আমরা সার্বিক দিকনির্দেশনা দিয়েছি। আশা করছি, স্টার্টআপগুলোর জন্য এ ধরনের সহযোগিতা ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে। বৈশ্বিক মহামারি দেশি স্টার্টআপদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি নিয়ে আসার অবারিত সুযোগ করে দিয়েছে। করোনাকাল প্রতিদিনের জীবনযাত্রাকে আরও বেশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত করেছে। এ বিষয়টিই স্টার্টআপগুলোকে বিকশিত হতে সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, এ কর্মসূচি চলাকালে নিজেদের ব্যবসায়িক ধারণার উন্নয়নে স্টার্টআপগুলো দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ ও পেশাদারদের কাছ থেকে নানান পরামর্শ পেয়েছে। এ কর্মসূচিতে স্টার্টআপগুলোর ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিতে তাদের সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সাথে যোগাযোগে সহায়তা করেছে।
কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি দলকে আনুমানিক ৬৫ লাখ টাকা সমমূল্যের সহায়তা দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, সিড স্টারের সাথে অংশীদারিত্বে গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটরের ষষ্ঠ ব্যাচের কার্যক্রম শুরু হয় গত নভেম্বরে। প্রযুক্তি ভিত্তিক স্টার্টআপগুলোর ক্ষমতায়ন, বিকাশ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাজের মানোন্নয়নে তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করাই গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটরের মূল লক্ষ্য।
গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রাম ষষ্ঠ ব্যাচের আটটি স্টার্টআপ যথাক্রমে লেটস ফার্নিশ, আমার স্টক, শপওয়ে, ঢাকা কাস্ট, অটোট্র্যাক, এক্সপ্লয়েট, ল্যান্ডনক এবং দর্জি-ই।