মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত এসইডিপি প্রকল্পের আওতায় উপবৃত্তি পাবে ৪০ লাখ শিক্ষার্থী। বিকাশের মাধ্যমে এই বৃত্তির টাকা প্রদান করা হবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি নিজ কার্যালয়ে বরগুনার আমতলী সরকারি এ কে হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তামান্না আক্তারের সঙ্গে ভিডিও যোগাযোগে কথা বলার পর তার অভিভাবকের বিকাশ একাউন্টে তাৎক্ষণিক উপবৃত্তির টাকা পাঠিয়ে প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রদত্ত উপবৃত্তির টাকা অগ্রণী ব্যাংক হয়ে তাৎক্ষণিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের বিকাশ একাউন্টে পৌঁছে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন মন্ত্রী এবং উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থী।
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভিন্ন স্তরের মধ্যে মাধ্যমিকেই ঝরে পড়ার হার বেশি। সংশ্লিষ্টদের মতে এই ঝরে পড়ার মূল কারণগুলোর অন্যতম প্রাথমিক স্তরের চেয়ে মাধ্যমিক স্তরে পড়ার খরচ বেশি। সরকারের পক্ষ থেকে এই স্তরের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমাতে বিভিন্ন সময়ে কয়েকটি প্রকল্পের মাধ্যমে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছিল। তবে এ বছর সবগুলো প্রকল্পকে সমন্বিত করে সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি) এর আওতায় উপবৃত্তি বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
উপবৃত্তির মত পদক্ষেপের কারণে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায় সুফল বইতে শুরু করেছে। এক হিসাবে দেখা যায় ২০০৮ সালে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার ছিল ৬১.৩৮ শতাংশ, যা কমে ২০১৮ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৩৮.৩০ শতাংশে। সমন্বিত এই প্রকল্প সার্বিকভাবে উপবৃত্তির উপকারভোগীর সংখ্যা যেমন বাড়িয়েছে, তেমনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সহায়তায় এর বিতরণ ব্যবস্থাকে করেছে আরও কার্যকর ও নির্ভুল।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এর হারমোনাইজড স্টাইপেন্ড প্রোগ্রাম এর প্রকল্প পরিচালক শরীফ মুর্তজা মামুন বলেন, দেশব্যাপী ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারটি বিকাশ এর মাধ্যমে এখন সিম্পল হয়ে গেছে। ছাত্র-ছাত্রীদেরও সুবিধা হয়েছে অনেক। এর মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে সরকারও। মূল্যবান সময় ও রাষ্ট্রীয় অর্থের সাশ্রয় হয়েছে। বিভিন্ন দপ্তরের জটিলতা কমে পুরো প্রক্রিয়াটি হয়েছে আরও দ্রুত ও নিরাপদ।
বিকাশের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মিজানুর রশীদ বলেন, উপবৃত্তি বিতরণে স্বচ্ছতা, দ্রুততা নিশ্চিত করে সাফল্যের সাথে ২০১৭ সাল থেকে মাধ্যমিক স্তরের উপবৃত্তি বিতরণ করছে বিকাশ। প্রায় ৩৫ লাখ শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মোবাইলে পৌঁছে যাওয়া উপবৃত্তির অর্থ তারা কোন রকম বাড়তি খরচ ছাড়াই ক্যাশআউট করে নিতে পারছেন। সারাদেশে বিকাশের দুই লাখ ২৫ হাজার এজেন্ট পয়েন্ট থেকে ক্যাশআউট করার সুযোগ থাকায় এসব শিক্ষার্থীদের বাড়তি কোন ঝামেলায়ও পড়তে হচ্ছে না।