ব্যবহারকারীদের তথ্য হাতিয়ে নেয়া এবং তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করে দেয়ার বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে ফেসবুকের বিরুদ্ধে। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য 'ফেসবুক রিসার্চ' অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সংগ্রহ করত।
কিন্তু এইবার তারা তাদের এই রিসার্চ অ্যাপ এবং ওনাভো ভারচুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) অ্যাপ্লিকেশন গুগল প্লে স্টোর থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। এর ফলে বর্তমানে ফেসবুক তার কৌশলগত যে মার্কেট রিসার্চ মনিটরিং ব্যবস্থা ছিল তা হারাবে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা।
২০১৩ সালে ফেসবুকেরই একটি কোম্পানি ওনাভো ‘মোবাইল ওয়েব অ্যানালাইটিক্স’ অ্যাপ্লিকেশন ২০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে। যখন এই খবর প্রকাশ পায় ,তখন অ্যাপেল কোম্পানি তার ব্যবহারকারীদের তথ্য নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ফেসবুককে তাদের ওনাভো ভিপএন অ্যাপ সরানোর নির্দেশ দেয়।
ব্যবহারকারীদের লোকেশন, হেলথ মনিটরিং, ফেইক নিউজের ছড়াছড়ি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে সম্প্রতি তোপের মুখে পড়তে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে।
তাই বর্তমানে ফেসবুক তাদের এই ‘ওনাভো (ভিপিএন) অ্যাপ সার্ভিস’ গুগল প্লে স্টোর থেকে সরিয়ে নিচ্ছে এবং ওনাভো কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নতুন কাউকে আর নিয়োগ দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি।
ফেসবুকের নীতি নির্ধারকরা মনে করছে, এইভাবে ব্যবহারকারীদেরকে না জানিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা নেতিবাচক কাজ। এর পরিবর্তে ফেসবুক এখন ‘পেইড প্রোগাম’ নিয়ে কাজ করবে। এতে করে ব্যবহারকারী জানবে তার তথ্য দেয়া হচ্ছে যা একটি আর্থিক ক্ষতিপূরণ ভিত্তিতে।
কিন্তু বিগত দিনে ‘ওনাভো’ ভিপিএন অ্যাপ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের পছন্দ-অপছন্দ, অনুভূতি, যেকোন পণ্য এবং চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের অবস্থান কি সেই মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলো সম্পর্কে তারা তথ্য সংগ্রহ করত।
এতে করে ফেসবুককে তার প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করত এবং বিভিন্ন বিষয়ে তারা জনমত তৈরি করত। যেমনটা আমরা জানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ‘বিগ ডাটা’ নামে যা মার্কিন জাতিকে নির্বাচনের আগে সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করে।
জানা যায়, ২০১৪ সালে ফেসবুক যখন অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ ১৯বিলিয়ন মার্কিন ডলারে কিনে নেয় এর পেছনে ফেসবুক কে এই সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে ওনাভো রিসার্চ অ্যাপ।
তাই ফেসবুক এখন ব্যবহারকারীদের তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরিয়ে নিচ্ছে এই অ্যাপ্লিকেশন।