ইনিংস হারের সব রকম ব্যবস্থাই প্রস্তুত ছিল। কিন্তু নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটিং দৃঢ়তায় সেই লজ্জা এড়ানো গেলেও ম্যাচ বাঁচানো যায়নি। এড়ানো যায়নি হার। ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হার মানল টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের লক্ষ্য ১৩ রান তুলে শিরোপা উৎসবে মাতলো স্বাগতিকরা। প্রথম টেস্টের মতো এ ম্যাচের ব্যাট বলের লড়াইও থামল চতুর্থ দিনের খেলা মাঠে গড়়াতেই। প্রকৃতি শত চেষ্টা করেও যেন টাইগারদের ম্যাচ বাঁচাতে পারল না। বৃষ্টির হানায়ও হলো না কোনো লাভ।
এ জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সাকিব বাহিনীকে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করল উইন্ডিজ। অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে ধরাশায়ী হয়েছিল দেশের ছেলেরা। টাইগারদের ফের ধসিয়ে দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের র্যাঙ্কিংয়ের মূল্যবান ১২টি পয়েন্ট পেল মেন ইন মেরুন শিবির।
প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংটা ভালো হয়নি সাকিব-তামিমদের। দ্বিতীয় ইনিংসেও সফরকারীদের ব্যাটিং হলো যাচ্ছে তাই বাজে। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ১৩। মাত্র ২.৫ ওভার ব্যাট করেই সহজ এই টার্গেটটা ক্যাপ্টেন ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের দল তুড়ি মেরে তুলে ফেলে উদ্বোধনী জুটিতেই। জন ক্যাম্পবেল ৯ আর ব্রাথওয়েট ৪ রান এনে দিতেই জয়ের বন্দরে পা রাখার আনন্দে নেচে উঠে উইন্ডিজ।
ব্যাট হাতে একাই লড়ে গেছেন নুরুল হাসান সোহান। হাঁকালেন দাপুটে এক হাফ-সেঞ্চুরি। ৫০ বলে ৬ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় খেলেন ৬০ রানের দারুণ এক ইনিংস। তবে আলজারি জোসেফ, জেডেন সিলেস ও কেমার রোচের পেস ঝড়ে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের সংগ্রহটা বড় হয়নি। যে কারণে সেন্ট লুসিয়া টেস্টও জমে উঠেনি। তার সঙ্গে সিরিজ জয়ের লড়াইটাও হলো একপেশে। ক্যারিবিয়ানদের কাছে রীতিমতো উড়ে গেল লাল-সবুজ পতাকাধারীরা। লাল বলের ক্রিকেটে শততম ম্যাচ হারল বাংলাদেশ।
সোহানের ফিফটিতেই দ্বিতীয় ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। তবে এতে লিড দাঁড়ায় মাত্র ১২ রানের। মেহেদী হাসান মিরাজ ৪ এনে দিয়ে সাজঘরে ফিরে দর্শকদের হতাশ করেন। লেজের দিকের তিন ব্যাটসম্যান এবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ ডাক মারায় সোহানের ইনিংস বড় হয়নি। বাড়েনি টাইগারদের লিড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন কেমার রোচ, আলজারি জোসেফ ও জেডেন সিলেস। তার আগে ৬ উইকেটে ১৩২ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। নুরুল হাসান সোহান ১৬ ও মেহেদী হাসান মিরাজ শূন্য রান নিয়ে ব্যাটিং করতে মাঠে নামেন। বৃষ্টি বিঘ্নিত চতুর্থ দিনে দীর্ঘ সময় পর খেলা শুরু হলেও টাইগারদের ব্যাটিং লড়াই টিকল মাত্র ৯ ওভার।
দুই ওপেনার ব্যর্থ হলেও হাল ধরে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন ওয়ানডাউনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে ফিফটি পাননি তিনি। ৯১ বলে ৮ বাউন্ডারিতে খেলেন ৪২ রানের ইনিংস।
ড্যারেন স্যামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাকি ব্যাটসম্যানরা ছিলেন আসা যাওয়ার পথে। ক্রিকেট অনুরাগীদের হতাশ করে বিদায় নেন তামিম ইকবাল (৪), এনামুল হক বিজয় (৪) ও মাহমুদুল হাসান জয় (১৩)। লিটন দাস ১৯ ও সাকিব করেন ১৬ রান।
ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরা কাইল মেয়ার্সের সেঞ্চুরিতে সবকটি উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকরা দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে গড়ে ৪০৮ রানের পুঁজি। এতে উইন্ডিজ লিড পায় ১৭৪ রানের। আর লিটন দাসের ফিফটির পরও বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ২৩৪ রানে।