বিপিএলের ফাইনালে যেন মঞ্চস্থ হলো ক্রিকেটীয় এক নাটক। সেই নাটকের রোমাঞ্চ শেষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ১ রানে হারিয়ে বিপিএলে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। শেষ ওভারে বরিশালের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৬ বলে ১০ রান। কিন্তু শহীদুল ইসলামের ওভার থেকে বরিশাল তুলতে পেরেছিল মাত্র ৮ রান। তার বোলিং দাপটেই নগ কামড়ানো রুদ্ধশ্বাস এক জয় তুলে নিয়েছে কুমিল্লা।
বিপিএলের প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে লিগ পর্বে শীর্ষে থাকা বরিশালের কাছে হেরে গিয়েছিল কুমিল্লা। পরে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কেটেছিল কুমিল্লা। তবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তাক লাগিয়ে দিল সেই কুমিল্লা। সেই হারের মধুর প্রতিশোধ নিল তারা। তবে সেটা শিরোপার বিনিময়ে।
নারাইনের ফিফটির জবাবে পাল্টা জবাব দেন শৈকত আলী। ওয়ানডাউনে নেমে তিনি দেখান ব্যাটিং তাণ্ডব। ৩৪ বলে ১১ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় খেলেন ৫৮ রানের দাপুটে এক ইনিংস। দ্বিতীয় উইকেটে ক্রিস গেইলের সঙ্গে খেলেন ৭৪ রানে পার্টনারশিপ। তবে গেইল বিদায় নেন ৩৩ রান করে। তবে কুমিল্লার শেষ দিকের বোলিং দাপটে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রানেই গুটিয়ে বরিশাল। কুমিল্লার জার্সি গায়ে দুটি করে উইকেট নেন সুনীল নারাইন ও তানভীর ইসলাম। তাদের সঙ্গে একটি করে উইকে নেন মুস্তাফিজর রহমান ও শহীদুল ইসলাম।
বিপিএলের প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে লিগ পর্বে শীর্ষে থাকা বরিশালের কাছে হেরে গিয়েছিল কুমিল্লা। পরে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কেটেছিল কুমিল্লা। তবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তাক লাগিয়ে দিল সেই কুমিল্লা। সেই হারের মধুর প্রতিশোধ নিল তারা। তবে সেটা শিরোপার বিনিময়ে।
আগের ম্যাচের মতো বিধ্বংসী ইনিংস খেলা শুরু করেছিলেন সুনীল নারিন। দাপুটে ব্যাটিংয়ে হাঁকিয়ে ফেলেন দুরন্ত এক ফিফটি। ২৩ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কায় খেলেন ৫৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। ২১ বলে ফিফটি করে বিপিএলের ফাইনালে দ্রুততম অর্ধ-শতক পূর্ণ করার রেকর্ডও গড়েন নারিন।
কিন্তু নারিনের বিদায়ে পর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের রানের গতি কমে যায়। ব্যাট হাতে দাপট দেখান কেবল মঈন আলী ৩২ বলে দুই বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৩৮ রান এনে দেন ইংল্যান্ডের এ তারকা অলরাউন্ডার। তাতেই ৯ উইকেট হারিয়ে বিপিএলের ফাইনালে ১৫১ রানের লড়াকু পুঁজি গড়েছে ক্যাপ্টেন ইমরুল কায়েসের দল।
শেষ দিকে আবু হায়দার রনি রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। ব্যাটিং দৃঢ়তা দেখিয়ে দলীয় স্কোরে যোগ করেন ১৯ রান। আর ইমরুল কায়েসের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। ফরচুন বরিশালের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মুজিব উর রহমান ও শফিকুল ইসলাম। একটি করে উইকেট পান সাকিব আল হাসান, ডোয়াইন ব্রাভো ও মেহেদী হাসান রানা।
তার আগে বিপিএলের ফাইনালে টস ভাগ্য কথা বলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। তাই তো টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন দলের ক্যাপ্টেন ইমরুল কায়েস। পেটের পীড়ার জন্য গতকাল ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব ফাইনালের আগে ট্রফি নিয়ে ফটোসেশনে আসতে পারেননি। এখানে সাকিবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন কিপার-ব্যাটসম্যান সোহান। তবে পরিচালক অমিতাভ রেজার একটি কোমল পানীয়’র বিজ্ঞাপনের শ্যুটিংয়ে ঠিকই ছিলেন সাকিব। তাই জৈব সুরক্ষা বলয়ে তার থাকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। তবে শ্যুটিংয়ের জন্য হোটেলের বাইরে গেলেও নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে ফাইনাল খেলতে নামেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের অপরিবর্তিত দল নিয়েই শিরোপা লড়াইয়ে মাঠে নেমেছে আসরের দুইবারের সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। তবে ফরচুন বরিশাল দলে পরিবর্তন আনে একটি। দল থেকে ছিটকে যান জিয়াউর রহমান। তার বদলে একাদশে ঢুকেন শৈকত আলী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স একাদশ: ইমরুল কায়েস (অধিনায়ক), লিটন দাস, আরিফুল হক, মুস্তাফিজুর রহমান, আবু হায়দার রনি, তানভীর ইসলাম, এমডি শহীদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, সুনীল নারিন, মঈন আলী ও ফাফ ডু প্লেসিস।
ফরচুন বরিশাল একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুনিম শাহরিয়ার, ক্রিস গেইল, নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, ডোয়াইন ব্রাভো, শৈকত আলী, নুরুল হাসান সোহান, মুজিব উর রহমান, শফিকুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান রানা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৫১/৯, ২০ ওভার (নারাইন ৫৭, ইমরুল ১২, মঈন ৩৮, আবু হায়দার ১৯; মুজিব ২/২৭, শফিকুল ২/৩১, সাকিব ১/৩০, ব্রাভো ১/২৬ ও মেহেদী রানা ১/৩৪)।
ফরচুন বরিশাল: ১৫০/৮, ২০ ওভার (গেইল ৩৩, সৈকত ৫৮, শান্ত ১৪; নারাইন ২/১৫, তানভির ২/২৫, মুস্তাফিজ ১/৩১ ও শহীদুল ১/৩৬,)।
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: সুনীল নারিন।
সিরিজসেরা: সাকিব আল হাসান।