অনেক নাটকের পর অবেশেষে ঢাকায় ফেরার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অভিমান ভাঙায় চট্টগ্রামেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারকা এ অলরাউল্ডার। সঙ্গে দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে মাঠেও খেলবেন তিনি।
তার আগে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের নেতৃত্ব হারান মেহেদী হাসান মিরাজ। নেতৃত্বভার চলে যায় বর্ষীয়ান ক্রিকেটার নাঈম ইসলামের কাঁধে। বন্দরনগরীর ফ্র্যাঞ্চাইজিটি অবশ্য জানায়, নির্ভার রাখতেই মিরাজকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে শোনা যায়, ইংল্যান্ড ফিরে যাওয়া প্রধান কোচ পল নিক্সনের নজর কাড়তে পারেননি অধিনায়ক মিরাজ। ফিরে যাওয়ার আগে তাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়ে গেছেন নিক্সন। তবে হঠাৎ অধিনায়ক বদলের বিষয়টি মোটেই মেনে নিতে পারেননি এ টাইগার অলরাউন্ডার।
চট্টগ্রামের হয়ে বিপিএলে আর খেলবেন না বলে চিঠি দিয়ে বিসিবি’কে জানিয়েও দিয়েছিলেন মিরাজ। মায়ের অসুস্থতার কথা বলে বিকেলে ঢাকায় ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। হোটেলের নিচে নামলে দলের এক কর্মকর্তা তাকে আবার হোটেলে নিয়ে যান। তবে গণমাধ্যমকে পেয়ে মনের রাগটা ঝেরেছেন এ স্টার ক্রিকেটার।
চট্টগ্রাম চ্যালঞ্জার্সের সিওও সৈয়দ ইয়াসির আলমের ও ম্যানেজার ফাহিম মুনতাসির সুমিতের সঙ্গে নিজের মতবিরোধের কথা তুলে ধরে মিরাজ বলেন, ‘কেন থাকবো না! ও (ইয়াসির) যদি দলের সঙ্গে থাকে আমি খেলবো না। সব সময়তো ব্যস্ত থাকে দেখি। ও যদি দলে থাকে আমি থাকবো না। ইয়াসির ভাই যদি না থাকে তাহলে আমি দলে খেলব, নয়তো খেলবো না।’
তিন ঘণ্টা আগে অধিনায়ক বদল করা পছন্দ হয়নি মিরাজের, ‘আপনি যদি দেখেন বিপিএলে গত দুই বছর আমিতো ওপেনিংয়েই ব্যাটিং করেছি। ভালোই খেলেছি। আমি আমার মতামত দিয়েছি। আমিতো তাকে জোর করেছি তেমন তো না। জোর করলে তো আপনারা দেখতেন আমি খেলতাম। দুইজন যেটা করেছে সেটা তো সবাই দেখেছে। অবশ্যই খারাপ করেছে। খেলোয়াড় হিসেবে আমার জন্যেই খারাপ। তিন ঘণ্টা আগে কীভাবে এটা করে।’
বিতর্কের জন্য মিরাজ দায় দেন সিওও ইয়াসিরকেই, ‘কোচ মিডিয়াতে যে স্টেটমেন্ট দিয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আপনি দরকার পড়লে কোচকে ফোন করে দেখেন। আমার সঙ্গে ৩০ মিনিটের মতো কথা হয়েছে। ইয়াসির যে স্টেটমেন্ট দিয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইয়াসিরই সবচেয়ে বড় কালপ্রিট। আমি শিওর মালিককে যেভাবে বলা হচ্ছে উনি সেভাবে করছে। ওনি এখানে কিছুতে ইনভলব না।’
সিদ্ধান্তটা আগে না জানানোয় রেগে যান মিরাজ, ‘খেলার তিন ঘণ্টা আগে আমাকে বলেছে তুমি অধিনায়কত্ব করছো না। সেটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। আমি জানতে চেয়েছি কেন আপনারা এমন সিদ্ধান্ত নেবেন। আপনাদের চিন্তা-ভাবনা থাকলে আমাকে আগে থেকেই জানিয়ে দিতেন-আমি কী বলেছি আমার অধিনায়কত্ব লাগবে। এটাতো খেলোয়াড়ের জন্য অপমানজনক। এখানে ম্যানেজার যারা আছে, সিওও মিলে হয়তো একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
কোচ তাকে নিয়ে নেতিবাচক কিছুই বলেননি। মিরাজ বলছেন তেমনটাই, ‘মালিককে নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। মালিক অনেক ভালো মানুষ। কোচ চলে গেছে, উনি যাওয়ার আগে নাকি আমাকে নিয়ে অনেক কথা বলে গেছে। আমি নাকি নিজের জন্য ক্রিকেট খেলি। আমি নাকি স্বার্থপর। ও আচ্ছা আমাকে ফোন দিয়েছে। প্রায় ৩০ মিনিটের মতো কথা হয়েছে। ও আমাকে এমন কিছু বলে নাই। অথচ আমাকে যেটা বলা হয়েছে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কোচের নাকি মদদ আছে। আপনারা কোচকে জিজ্ঞেস করে দেখেন।’