বিসিবি'র প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর সঙ্গে কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছুঁড়েছেন। আর তাদের দুজনের কথার বাহাস নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে বোর্ড।
বিসিবি'র ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির নতুন চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, এমন মন্তব্য করা ঠিক হয়নি নান্নুর, ‘আশরাফুল যেহেতু বর্তমান খেলোয়াড় আর সাবেক একজন অধিনায়ক, আমি মনে করি সরাসরি এভাবে আক্রমণ করা ঠিক হয়নি। কাউকেই এভাবে আক্রমণ করা ঠিক নয়। আপনি একটা পদে আছেন বোর্ডে, ওই জায়গা থেকে এমন মন্তব্য না করাই ভালো ছিল। যেহেতু নির্বাচক কমিটি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের অধীনে, আমি এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি।’
এখন ঘরোয়া ক্রিকেটে দল পেতে আশরাফুলের সমস্যা হবে কিনা এমন প্রশ্নে জালাল ইউনুস বলেন, ‘তেমন কিছু হবে না। আমার মনে হয় না এমন কিছু হবে। আমার মনে হয় না ব্যক্তিগতভাবে কেউ এর শিকার হবে। যারা আসবে পারফরম্যান্সের জোরেই দলে আসবে।’
দুজনের বাকযুদ্ধ শুরু আশরাফুলের এক সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে। আশরাফুল এক টিভি চ্যানেলকে জানান, জাতীয় দলের নির্বাচকদের কাজের মেয়াদ ৩ থেকে ৪ বছর করা উচিত।
পরে এক টিভি চ্যানেলে আশরাফুলকে 'দেশদ্রোহী’ ও ‘ফিক্সার’ বলেন নান্নু। আশরাফুলের কথার জবাবে নান্নু বলেন, ‘আশরাফুলের এই কথার সাথে আমি একটা জিনিস যুক্ত করতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার একজন প্রধান নির্বাচক কত বছর কাজ করেছে ওর বোধহয় ধারণা নেই। প্রায় ৯ থেকে ১২ বছর একটানা কাজ করেছে। অস্ট্রেলিয়া কি ক্রিকেট থেকে পিছিয়ে গিয়েছে?’
রেগে গিয়ে নান্নু বলে বসেন, ‘ওর তো বোঝার কথা না। যেসব খেলোয়াড় দেশদ্রোহী হয়ে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হয়, ওদের কাছ থেকে ভালো পরামর্শ আশা করা কঠিন।’
ভার্চুয়াল জগতে নান্নুর সেই ভিডিও দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। বিষয়টি কেউ ভালোভাবে নিচ্ছে না। রোববার রাতে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে পাল্টা জবাব দেন সাবেক ক্যাপ্টেন আশরাফুল।
ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ উগরে দেন আশরাফুল। ফিক্সিং অপরাধে শাস্তি পেলেও নান্নুর মতো অনেকে হয়তো তাকে ক্ষমা করতে পারেননি। এমন অনুযোগ করে আশরাফুল বলেন, ‘নান্নু ভাই যেভাবে নাম ধরে দেশদ্রোহী, ম্যাচ ফিক্সার বললেন, এটা তো ২০১৩ সালে হয়েছে। আমি সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছি, শাস্তিও হয়েছে। আমি যদি প্রকাশ্যে স্বীকার না করতাম তাহলে হয়ত ভিন্ন চিত্র হতো। তাহলে হয়ত এক বছরের শাস্তি হতো, হয়ত এখনো জাতীয় দলে খেলতাম। আপনাদের কাছে এখনো ক্ষমা পাইনি, আপনার কথাতে এটা বোঝা যাচ্ছে। আমার প্রকাশ্যে স্বীকার করা ভুল হয়েছে।’
নান্নুর কথার আক্রমণে নিজের কষ্টের কথা বলে আশরাফুল যোগ করেন, ‘যেভাবে আক্রমণ করলেন, কষ্ট লেগেছে। আমি তো উল্টাপাল্টা কিছু বলিনি। আর আমি কোনো ব্যক্তির নাম বলিনি, আমি ঐ দায়িত্বের কথা বলেছি। নান্নু ভাই লাইভে ঢুকে সরাসরি আক্রমণ করলেন আমার নাম ধরে। এটা আসলে খুবই দুঃখজনক।’