বাংলাদেশ শুরুতে করল এলোমেলো ব্যাটিং। পরে বল হাতে থেকে গেল নিষ্প্রভ। কিন্তু ইংল্যান্ড করল ঠিক তার উল্টোটা। বল হাতে তোপ দাগিয়ে ব্যাট হাতেও দেখাল দাপট। ফল যা হওয়ার তাই হলো। জেসন রয়ের ফিফটিতে টাইগারদের ৮ উইকেটে ধসিয়ে দিল ইংলিশরা। ইয়ন মরগানের দল জিতল ৩৫ বল হাতে রেখেই।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওপেনার জেসন রয়ের দুর্দান্ত ফিফটিতে জয়ের ভিত পায় ইংল্যান্ড। বাকি কাজটি সারেন ডেভিড মালান। ৩৮ বলে ৫ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ৬১ দাপুটে এক ইনিংস খেলে বিদায় নেন ম্যাচসেরা জেসন রয়।
২৫ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৮* রানের হার না মানা ইনিংস খেলে ইংলিশদের জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ডেভিড মালান। তার আগে দলীয় স্কোরে ১৮ রান যোগ করেন জস বাটলার। তাতেই ১৪.১ ওভারে জয়ের লক্ষ্য টপকে ২ উইকেট হারিয়ে ১২৬ রান তুলে ফেলে ইংল্যান্ড।
বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নেন নাসুম আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিংটা মোটেই ভালো হয়নি লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ের কারণে বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। নাসুম আহমেদের ঝড়ো ইনিংসে কোনোমতে সম্মানজনক স্কোর পায় দেশের ছেলেরা। টাইগাররা ৯ উইকেটে গুটিয়ে যায় ১২৪ রানে।
শুরুর দিকে জোড়া আঘাত করেন মঈন আলী। ফিরিয়ে দেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম শেখকে। দলীয় ১৪ রানে ফেরেন দুজনে। লিটন করেন ৯ আর নাঈম সংগ্রহ করেন ৫ রান। পরে সাকিব আল হাসানকে (৪*) ফিরিয়ে দেন ক্রিস ওকস।
মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দলের ব্যাটিং বিপর্যয় সামাল দেওয়ার আভাস দিয়ে গড়েন পার্টনারশিপ। খুব বেশি দূর আগাতে পারেননি। চতুর্থ উইকেটে দুজনে তোলেন ৩৭।
দারুণ ব্যাটিং শুরু করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে স্কোর ঠিক বড় করতে পারলেন না এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। ৩০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৯ রান করে লিভিংস্টোনের এলবিডব্লির ফাঁদে পা দিয়ে ফেরেন মুশফিক। এটাই ইনিংসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর।
তার পর ৫ রান করে রান আউটের শিকার হয়েছেন আফিফ হোসেন। ১৯ রান ক্রিজ থেকে বিদায় নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও।
মাঝে নুরুল হাসান সোহান ১৬ রান যোগ করেন দলীয় স্কোরে।ইনিংসের শেষ দুই বলে জোড়া আঘাত করেন টাইমল মিলস। টানা দুই বলে ফিরিয়ে দেন নুরুল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানকে।
তার আগে মেহেদী হাসানের ব্যাট থেকে আসে ১১ রান। শেষ দিকে বাংলাদেশের ইনিংস একটু বড় হয় নাসুম আহমেদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। মাত্র ৯ বলে ১ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ১৯* রানে অপরাজিত থেকে যান তিনি।
ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি উইকেট শিকার করেন টাইমল মিলস। দুটি করে উইকেট নেন মঈন আলী ও লিয়াম লিভিংস্টোন। বাকি উইকেটটি যায় ক্রিস ওকস এর পকেটে।
তার আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। তাই তো আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরুতে বল হাতে মাঠে নামে ইংলিশ শিবির।
টি-টোয়েন্টিতে ইংলিশরা বড়ই অচেনা ছিল টাইগারদের কাছে। কেননা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৭ বছর ধরে খেললেও এর আগে কখনোই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ তো দূরে থাক দ্বিপাক্ষিক অথবা ত্রিদেশীয় সিরিজেও টি-টোয়েন্টি খেলা হয়নি দু'দেশের। এ দিক থেকে টেস্ট খেলুড়ে সব দেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি খেলার চক্রটা পূরণ হলো আজ।
পিঠের চোট নিয়ে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে গেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সাইফউদ্দিন বাদ পড়ায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নিয়েছেন পেসার মোহাম্মদ রুবেল। তিনি অবশ্য আগে থেকেই দলে ছিলেন স্ট্যান্ডবাই হিসেবে। এবার রুবেল জায়গা করে নিলেন মূল দলে। তবে সাইফউদ্দিনের জায়গায় একাদশে ফিরেন পেসার শরিফুল ইসলাম।
বাংলাদেশ একাদশ: লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটরক্ষক), শেখ মেহেদী হাসান, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান ও নাসুম আহমেদ।
ইংল্যান্ড একাদশ: জেসন রয়, জস বাটলার, ডেভিড মালান, জনি বেয়ারস্টো, লিয়াম লিভিংস্টোন, ইয়ন মরগান (অধিনায়ক), মঈন আলী, ক্রিস ওকস, ক্রিস জর্ডান, আদিল রশিদ ও টাইমাল মিল স।