প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের কাছে টানা দুই হার। পরে বিশ্বকাপের মঞ্চে স্কটল্যান্ডের কাছে পরাজয়। এটা ঠিক কেউ মেনে নিতে পারেননি। বিশেষ করে স্কটিশদের কাছে হার হতবাক করেছে সবাইকে। শুধু ক্রিকেট অনুরাগীরাই নন। কষ্ট পেয়েছেন ক্রিকেটাররাও।
কিন্তু তার চেয়েও বড় কষ্ট পেয়েছেন ক্রিকেটাররা সীমাহীন সমালোচনায়। ক্রিকেট প্রেমী থেকে শুরু করে বিসিবি সভাপতিও তাদের ছেড়ে কথা বলেননি। রীতিমতো কাঠগড়ায় তুলেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে।
ওমানের পর টাইগারদের থাবায় ৮৪ রানের বড় ব্যবধানে কুপোকাত হয়েছে আজ পুঁচকে পাপুয়া নিউগিনি। টানা দুই জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ বা মূল পর্বে টিকিট কেটেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। কিন্তু তারপরও হাসি নেই ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মুখে। তার মুখভারী। সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা করতেই অধিনায়কের কণ্ঠে বেরিয়ে এলো চাপা কষ্টের আগুনের লেলিহান শিখা।
ফিফটি করা মাহমুদউল্লাহ জানালেন সমালোচনার তেতো তীর হজম করতে পারেননি তারা। সেই মানসিক কষ্টের ধকলটা ঠিক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। ভুলতে পারেননি হৃদয় ভেঙে দেওয়া সেই সমালোচনা, 'শক্ত হওয়াটাই মনে হয় স্বাভাবিক। ঠিকাছে, আমরা মানুষ, আমরাও ভুল করি। একদম ছোট করে ফেলা ঠিক না। কারণ এটা আমাদের দেশ, আমরা সবাই একসঙ্গে (আছি)। আমি সব সময় এই কথাটা বলি। পুরো দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি, এটা আমাদের মাথায় থাকে। আমাদের চেয়ে অনুভূতি কারো বেশি না আমার মনে হয়। সমালোচনা অবশ্যই হবে। খারাপ খেলেছি, কিন্তু একবারে ছোট করে ফেলা ঠিক না। এটা আমাদের সবারই খারাপ লেগেছে।'
মাহমুদউল্লাহ জানান, সব ধরনের সমালোচনাই ক্রিকেটারদের স্পর্শ করে। দাগ কেটে যায় তাদের হৃদয়ে, 'স্পর্শ সবই করে। বললাম যে আমরাও মানুষ, আমাদেরও অনুভূতি কাজ করে। আমাদেরও পরিবার আছে, আমাদের বাবা-মারাও বসে থাকে টিভি সেটের সামনে। আমাদের বাচ্চারাও বসে থাকে। তারাও মন খারাপ করে। আপনি যেটা বললেন যে সোশ্যাল মিডিয়া তো সবার হাতের নাগালে। সমালোচনা তো হবে, আমরা তো আশা করি সমালোচনা। অবশ্যই সমালোচনা হবে, কেন হবে না। সমালোচনার মাধ্যেম কেউ কাউকে ছোট করে ফেলে তখন এইগুলা খারাপ লাগে।'
ক্ষোভ ঝারলেন মন্থর ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন উঠায়। মাহমুদউল্লাহ বলেন, 'অনেক প্রশ্ন এসেছে আমার স্ট্রাইকরেট নিয়ে। আমরা তো চেষ্টা করেছি, চেষ্টার বাইরে তো আমাদের কাছে কিছু নেই। এরকম না যে আমরা চেষ্টা করিনি। হয়ত রেজাল্টটা আমাদের পক্ষে আসেনি। সমালোচনা অবশ্যই আমাদের কাম্য, সমালোচনা হবেই। আরেকটু যদি স্বাস্থ্যকর হয় সবার জন্য ভাল। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দিলে আমাদেরও ফিল হয়।'
ক্রিকেটারদের চোট নিয়েও খেলতে হয়। ক্যাপ্টেন জানালেন পর্দার আড়ালের সেই কষ্টকর অভিজ্ঞতার খবর, 'সবারই ব্যথা থাকে, কারো অনেক ইনজুরি থাকে ওইগুলা নিয়েই আমরা খেলি। দিনের পর দিন পেইন কিলার খেয়েই আমরা খেলি। হয়ত বিহাইন্ড দ্যা সিন অনেকে এইগুলা জানে না। কাজেই নিবেদন নিয়ে কথা বলা ঠিক না। আমি আশা করি দলের ভেতরে উদগ্রিব ভাব ছিল, সেটা ইতিবাচক ছিল। সাপোর্ট স্টাফসহ সবারই।'