ক্যাপ্টেন টম লাথাম দারুণ এক ক্রিকেটীয় ইনিংস খেললেন। দিলেন জয়ের আভাস। কিন্তু শেষটা ঠিক তার প্রত্যাশা মাফিক হলো না। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের দাপটের কাছে নিউজিল্যান্ড হার মানল ৪ রানে। পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ গুটিয়ে গেছে অতিথিরা।
নাটকীয় এ জয়ে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
ব্যাটিংয়ে দুরন্ত সূচনার ইঙ্গিত দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু সেটা ১৬ রান পর্যন্তই টিকে ছিল। এরপরই ছন্দ পতন ঘটে। দুই রানের ব্যবধানে দুই ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র ও টম ব্লান্ডেলকে হারিয়ে উল্টো বিপদের আভাস পেয়ে যায় সফরকীরা।
সেই ঘোর বিপদের সময় দলের হাল ধরেন টম লাথাম। অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে দলের বিপদ কাটিয়ে উঠেন। ওয়ানডাউনে নেমে কিউই ক্যাপ্টেন খেলেন ৬৫* রানের অনন্য এক ইনিংস খেলে থেকে যান অপরাজিত। কিন্তু জয়ের কাছাকাছি গিয়েও জয় ছিনিয়ে নিতে পারেননি লাথাম।
তৃতীয়ে উইকেটে উইল ইয়াংয়ের সঙ্গে ৪৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে সাহস যোগান লাথাম। তবে এ জুটি ক্রিজে থিতু হতে পারেনি। সাকিব আল হাসানের বলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইয়াং।
শেষ দিকে কোল ম্যাককনকির সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেট ৪৫ রানের জুটি গড়ে জয়ের খুব কাছেই চলে গিয়েছিল সফরকারীরা। কিন্তু নাহ! হাত ছোঁয়া দূরত্বে থেকেও জয়টা ছোঁয়া হলো না কিউইদের। শুধু লড়াইটাই করে গেল ব্ল্যাক ক্যাপস শিবির। লাথামকে সঙ্গ দিয়ে ১৫* অজেয় থেকে যান ম্যাককনকি।
বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান। বাকি উইকেটটি যায় নাসুম আহমেদের পকেটে।
তার আগে দুপুরে সূর্য হেসেছিল ঢাকার আকাশে। আর বিকেলে ক্রিকেট ময়দানে হাসে টাইগারদের ব্যাট। সেসুবাদে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের সামনে ১৪২ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। মিরপুর শেরে-এ-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে টাইগাররা।
প্রথম ম্যাচের ম্যাড়ম্যাড়ে ব্যাটিং কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠেন নাঈম শেখ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। তাতে শুরুটাও হয় দারুণ। উদ্বোধনী পার্টনারশিপে নাঈম শেখ ও লিটন দাস তুলে ফেলেন ৫৯ রান।
ওপেনার লিটন ৩৩ রান নিয়ে ফিরেন। আর দলীয় স্কোরে ৩৯ রান যোগ করেন অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নাঈম। ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থেকে যান ৩৭* রানে।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে তিনটি উইকেট শিকার করেন রাচিন রবীন্দ্র। একটি করে উইকেট নেন আজাজ প্যাটেল, কোল ম্যাকনকি ও হামিশ বেনেট।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় টাইগাররা। এ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে কোনো পরিবর্তন আসেনি। প্রথম ম্যাচের দল নিয়েই মাঠে নামে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
এ ম্যাচ দিয়েই নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে বেন সিয়ার্সের। একাদশে ফিরেন হামিশ বেনেট। তাদের দুজনকে সুযোগ করে দিতেই অতিথিদের একাদশ থেকে বাদ পড়েন ব্লেয়ার টিকনার ও জ্যাকব ডাফি।
বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ।
নিউজিল্যান্ড একাদশ: টম ল্যাথাম (অধিনায়ক), রাচিন রবীন্দ্র, উইল ইয়াং, টম ব্লান্ডেল, হেনরি নিকোলস, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, কোল ম্যাকনকি, ডগ ব্রেসওয়েল, এজাজ প্যাটেল, বেন সিয়ার্স ও হামিশ বেনেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৪১/৬, ২০ ওভার (নাঈম ৩৯, লিটন ৩৩, সাকিব ১২, মাহমুদউল্লাহ ৩৭*, সোহান ১৩; আজাজ ১/২০, ম্যাকনকি ১/২৪, বেনেট ১/৩২ ও রবীন্দ্র ৩/২২)।
নিউজিল্যান্ড: ১৩৭/৫, ২০ ওভার (রবীন্দ্র ১০, ইয়াং ২২, ল্যাথাম ৬৭*, ম্যাককনকি ১৫*; মেহেদী ২/১২, নাসুম ১/১৭, সাকিব ২/২৯)।
ফল: বাংলাদেশ ৪ রানে জয়ী।
সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ ২-০ তে এগিয়ে।
ম্যাচসেরা: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।