সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের মতো তৃতীয় ও শেষ ম্যাচও লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা জিতল দাপটের সঙ্গে। ১২০ রানের বড় ব্যবধানে জিতে ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছে টাইগাররা।
তবে ২৯৮ রানের পর্বতসম লক্ষ্য ছোঁয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছে ক্যাপ্টেন জেসন মোহাম্মদের দল। চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেনি অতিথি ক্রিকেটাররা। কিন্তু তারুণ্য নির্ভর স্কোয়াড নিয়ে কাজটা যে বেজায় মুশকিল। শুধু কঠিনই নয়। এক রকম অসম্ভবই। সেটা প্রমাণ করেই ৪৪.২ ওভারে ১৭৭ রানেই গুটিয়ে গেছে উইন্ডিজ।
আগের ম্যাচের তুলনায় ব্যাটিং খানিকটা ভালো হলেও জয়টা অধরাই রয়ে গেল তাদের কাছে। সফরকারীদের হয়ে কোনো ব্যটসম্যানই অর্ধ-শতক পূর্ণ করতে পারেননি। সৌম্য সরকারের এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পা দিয়ে সাজঘরের পথ ধরার আগে রভম্যান পাওয়েল তুলেন নেন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৭ রান। ওপেনার এনক্রুমাহ বনার ৩১ ও রেমন রেইফার সংগ্রহ করেন ২৭ রান। বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউ ১৫ রানও তুলতে পারেননি।
বাংলাদেশের হয়ে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন শিকার করেন ৩ উইকেট। দুটি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদি হাসান মিরাজ।
তার আগে ব্যাট হাতে দারুণ একটি দিন কাটিয়েছে টাইগাররা। ব্যাট হাসিয়েছেন একে একে চার ব্যাটসম্যান। ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পান হাফ-সেঞ্চুরির দেখা। তাদের ব্যাটিং দাপটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের জন্য ২৯৮ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুড়ে দেয় বাংলার দামাল ছেলেরা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে শুরুতে বাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯৭ রানের বিশাল পুঁজি গড়ে টাইগাররা।
করোনা সংক্রমণের শঙ্কা দূরে ঠেলে মাঠে নামতেই কথা বলা শুরু করেছে ক্যাপ্টেন তামিমের ব্যাট। প্রথম ম্যাচে নৈপুণ্য দেখিয়ে জয়ের ভিত গড়লেও হাফ-সেঞ্চুরি পাননি। তবে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল তারই। দ্বিতীয় ম্যাচে তার অর্ধ-শতকের ইনিংসটি ছিল ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। তৃতীয় ম্যাচেও তামিমের ব্যাট থেকে রান বৃষ্টি ঝরে। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৬৪ রানের ইনিংসের ভাগিদারও হন। মানে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও তামিমের সমান ৬৪ রানের দুরন্ত দুটি ইনিংস খেলেন। তবে রিয়াদ থেকে যান অপরাজিত।
প্রথম দুই ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং’র পর ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। পেয়ে যান হাফ-সেঞ্চুরির দেখা। সাজঘরে ফেরার আগে দলীয় স্কোরে এ ক্রিকেট মহাতারকা যোগ করেন ৫১ রান। তৃতীয় উইকেটে তামিমের সঙ্গে গড়েন ৯৩ রানের জুটি।
সফরকারী উইন্ডিজের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন আলজারি জোসেফ ও রেমন রেইফার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২৯৭/৬, ৫০ ওভারে (তামিম ৬৪, সাকিব ৫১, মুশফিক ৬৪, মাহমুদউল্লাহ ৬৪*; জোসেফ ২/৪৮, রেইফার ২/৬১ ও মেয়ার্স ১/৩৪)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৭৭, ৪৪.২ ওভারে (পাওয়েল ৪৭, বনার ৩১, রেইফার ২৭; সাইফ ৩/৫১, মুস্তাফিজ ২/২৪, মিরাজ ২/১৮, তাসকিন ১/৩২, সৌম্য ১/২২)।
ফল: বাংলাদেশ ১২০ রানে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ।
ম্যাচ সেরা: মুশফিকুর রহিম।
সিরিজ সেরা: সাকিব আল হাসান।