উপজেলা পর্যায়ে করোনা পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ।
তিনি বলেছেন, করোনায় আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় টেস্ট কিট, পিপিইসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম পেতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করা হলেও এখনো তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এ অবস্থায় তাদের সুরক্ষা দিতে না পারলে পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। তাই অবিলম্বে চিকিৎসকদের পিপিই সংকটসহ সব ধরনের সমস্যা সমাধানের দাবি জানাই।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এমন দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে আরও বলেছেন, এরই মধ্যে একজন চিকিৎসক মারা গেছেন। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন। আরো অনেক চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন।আশা করি করোনার সময় যারা এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছেন, দেশের স্বার্থে সরকার তাদের এবং তাদের পরিবারের পাশে থাকবে। সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ায় যতদ্রুত সম্ভব দেশের প্রতিটি উপজেলায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানরাও এগিয়ে আসতে পারেন। এছাড়াও প্রবীণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকদের চিকিৎসা সেবায় বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে সব থেকে বিপদে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষি শ্রমিক, গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানার শ্রমিকরা। সরকার এরই মধ্যে গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। সারাদেশে ত্রাণ ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এজন্য ধন্যবাদ জানাই, যোগ করেন তিনি।
তবে একই সময়ে অনেক জনপ্রতিনিধির ত্রাণের চাল আত্মসাৎ করার ঘটনাও ঘটছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণের বিষয়টি পুরোপুরি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দেওয়ার ব্যবস্থা করা গেলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রাণ পাবে। সরকারের উদ্দেশ্যও সফল হবে।
যারা করোনায় মারা গেছেন তাদের সবার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আসুন সবাই ভেদাভেদ ভুলে হাতে হাত রেখে করোনা মোকাবিলায় এগিয়ে আসি, বলেন বিরোধী দলের নেতা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের মানুষ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে ভয়াবহ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সমগ্র বিশ্ব এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে চলছে। নতুন আক্রান্ত আর মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। লকডাউন, আইসোলেশন, সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে (সঙ্গরোধ) সম্পূর্ণরূপে থমকে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। প্রতিটি দেশ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে পরিত্রাণ পেতে অন্য দেশ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। ভয়ংকর এক কঠিন পরিস্থিতিতে উপনীত হয়েছি আমরাসহ বিশ্ববাসী। এমন অবস্থা মানুষ আগে কখনো দেখেননি।
চিকিৎসকসহ করোনা নিয়ে যারা কাজ করছেন তারা বলছেন, এখনো এর কোনো প্রতিষেধক বের হয়নি। তাই সংক্রমণ এড়ানোর অন্যতম উপায় হলো নিজেকে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা। সবাই সচেতন হলে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। তাই সবাইকে সরকারের নির্দেশনা পুরোপুরি মেনে চলার এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানানা তিনি।
এছাড়া সেনাবাহিনী, পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে মানুষকে ঘরে রাখতে ও সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছেন। গণমাধ্যম কর্মীরাও প্রতিমুহূর্তের খবর জানাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছেন। তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রওশন এরশাদ।