বাসদের মূলনীতি বিরোধী অবস্থান ও ধারাবাহিকভাবে সাংগঠনিক নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী ও কেন্দ্রীয় নির্ধারিত ফোরামের ১৬ জন সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) থেকেই কিছু নেতাকর্মী বহিষ্কার প্রসঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী একথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দলের কেন্দ্রীয় কার্যকরী তুলনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুভ্রাংশু চক্রবর্তীসহ দলের নির্ধারিত ফরমে ১৬ জন সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়। কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তীকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি এ নোটিসের কোনো জবাব দেননি। এরপরে তারা তাদের সহযোগী মিলে বিভিন্ন জায়গায় বাসদ (মার্কসবাদী) নামে পৃথক কর্মকাণ্ড করছেন। মিডিয়াতে বক্তব্য দিচ্ছেন। এতে মানুষের মধ্যে কিছু প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, কিছু মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতা হয়েও শুভ্রাংশু চক্রবর্তী কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সাথে মতপার্থক্য জনিত ক্ষুব্ধতার শিকার হয়ে গত তিন বছর ধরে পার্টির প্রায় সব সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে দলের প্রতিটি হাউসে ভিন্ন বক্তব্য রেখেছেন। এক পর্যায়ে ইনফরমাল আলোচনাও করেছেন।
যত্রতত্র দলের সমালোচনা করা, ঊর্ধ্বতন পার্টি বডির আলোচনা নিয়ে নিচের স্তরের শেয়ার করা, নতুন কর্মীদের কেউটে কি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বোঝানো, নেতৃত্বকে না জানিয়ে গোপন মিটিং করা-এসব কর্মকাণ্ড তিনিসহ দলের কিছু নেতাকর্মী গত কয়েক বছর ধরে করে চলছেন। এসব কর্মকাণ্ড একটি বিপ্লবী দলের শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধি সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
তিনি আরো বলেন, এসব কর্মকাণ্ড একটি বিপ্লবী দলের শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধির সঙ্গে আদর্শগত আলোচনার প্রক্রিয়ায় প্রতিটি ভিন্নমত নিরসনের চেষ্টা করে যাচ্ছিল।
মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, গত কয়েক মাস আগে থেকে হঠাৎ করেই তিনিসহ কিছু নেতাকর্মী বলতে শুরু করেন বাসদ (মার্কসবাদী), এর পূর্বে বাসদও কোনো প্রার্থী হিসেবে গড়ে ওঠেনি। বর্তমানে বাসদ (মার্কসবাদী) একটি পেটিবুর্জোয়া ফ্র্যাকশনে পরিণীত হয়েছে। কমরেড শিবদাস ঘোষের চিন্তা নিয়ে আমাদের আবেগ ছিল বা প্রচার করেছি, কিন্তু এর কোনো চর্চাও বা জীবনে পালন হয় না।
তিনি বলেন, ১৯৮০ সাল থেকে এ পর্যন্ত কার্য পরিচালনা কমিটিসহ দলের সকল কাঠামো ভেঙে দিয়ে নতুন করে শুরু করার কথা বলে একান্তরে দল ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তার এসব বক্তব্য বাস্তবে দলের অস্তিত্বকে অস্বীকার করছে। এই সব পরিস্থিতিতে দলকে রক্ষা করার লক্ষ্যে তাদের বহিষ্কার করা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন দলের সদস্য আলমগীর হোসেন দুলাল, মানস নন্দী, উজ্জ্বল রায়, ফখরুদ্দিন কবির আতিক প্রমুখ।