হেরে যাওয়া প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার | 2023-11-27 22:26:15

কক্সবাজার-১ চকরিয়া-পেকুয়া সংসদীয় আসনে ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি। এই আসনে আবারও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনবার হেরে যাওয়া সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপিকে।

একসময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়া সংসদীয় আসনটিতে সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমেদ এর বেশ প্রভাব ছিল। সেখানে নৌকা নিয়ে তিনবার পরাজিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি। এরপর আওয়ামী লীগ বেছে নিয়েছিল জাফর আলমকে। দীর্ঘ ৪২ বছর পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে নির্বাচিত হয় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাফর আলম।

এদিকে সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপিকে মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া পেকুয়া) সংসদীয় আসন নিয়ে চলছে ব্যাপক তোলপাড়। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর যেন উনুনে গরম কড়াই উঠেছে।

এবার সেই গরম কড়াইয়ে তেল ঢাললেন এমপি জাফর আলম। সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে চকরিয়া পৌর এলাকার সিস্টেম কমপ্লেক্স নামের স্থানে নির্বাচন ঘিরে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জাফর আলমের সমর্থকরা। যেখানে মঞ্চে দেখা গেছে চকরিয়া পেকুয়ার ডজন খানেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের।

এসব চেয়ারম্যানদের নেতৃত্বে কলাগাছের শোডাউন নিয়ে আসা মিছিলে ওই মতবিনিময় সভা হয়ে উঠে বিশাল জনসভায়। সেখানে বক্তব্য দেন জাফর আলম।

বক্তব্যের পুরোটা জুড়েই ছিল নৌকার মনোনয়ন পাওয়া সালাউদ্দিন আহমেদ সিআইপিকে ঘিরে। জাফর বলেন, "আমি সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় এমপি হয়েছিলাম। কিন্তু সালাউদ্দিন আহমেদ সাধারণ মানুষের সাথে হ্যান্ডশেক করে টিস্যু দিয়ে হাত মুছে ফেলেন। তিনি জনবিচ্ছিন্ন। আমি টিস্যু দিয়ে হাত মুছিনা"।

সালাউদ্দিন আহমেদ পরপর তিনবার দলের মনোনয়ন পেয়েও পরাজিত হয়েছেন মন্তব্য করে জাফর বলেন, আমি ৪৩ বছর পর আওয়ামী লীগের ঘরে বিজয়ের মুকুট এনেছিলাম।

সালাউদ্দিন দলের দুঃসময়ে কোনো নেতাকর্মীর পাশেও ছিলেন না বলেন জাফর। তিনি আরো বলেন, এমনকি বিএনপি-জামায়াতের আগুন-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে রাজপথেও ছিলেন না। তাই দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে চকরিয়া-পেকুয়া-মাতামুহুরী উপজেলার আপামর জনগণ তার কাছ থেকে অনেক আগেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

এবারও তার নিশ্চিত ভরাডুবি হবে জেনে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সচেতন জনগণ আমার পক্ষেই আছেন এবং তারা আমাকে আবারও এমপি হিসেবে জয়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই আসন উপহার দেবেন বলে মনে করেন জাফর আলম।

মতবিনিময় সভায় তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, বিএনপির দুর্গে সালাউদ্দিনকে মনোনয়ন দেওয়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হতাশ। যার প্রভাব পড়তে পারে দলেও।

এর আগে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ঘোষণার পর পরই হাজারো নেতাকর্মী এবং জাফর আলমের সমর্থকরা রোববার (২৬ নভেম্বর) বিক্ষোভ মিছিল করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর