আ.লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সভায় আ জ ম নাছির

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো | 2023-11-27 20:53:43

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন এম এ লতিফ। তিনি গত তিনবার এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। তবে ২০০৮ সালে প্রথমবার মনোনয়ন পাওয়ার আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না এক সময়ের এই ব্যবসায়ী নেতা। সংসদ সদস্য হওয়ার পাঁচ বছর পর  ২০১৩ সালে নগর আওয়ামী লীগের কমিটির সদস্য পদ পান লতিফ। সেজন্য তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা আছে, ‘উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন লতিফ।’ সেজন্য এবার তাঁরা লতিফকে আর ছাড় দিতে চান না।

এরই মধ্যে এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) রাতে নগরীর সল্টগোলা ক্রসিং এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে মতবিনিময় সভা করেন তিনি। এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। সভায় নগর আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন নেতার পাশাপাশি ওই আসনের আওতাধীন ১০ ওয়ার্ডের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরসহ হাজারো নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন নিজেও। পাশাপাশি তিনি চট্টগ্রাম–৯ ও ১০ আসন থেকেও আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। তবে তিনি কোনো আসনেই মনোনয়ন পাননি। এরপর আ জ ম নাছির স্বতন্ত্র নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন। নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জিয়াউল হক সুমন, আ জ ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সেজন্য অনেকেই মনে করছেন, এম এ লতিফ দলীয় মনোনয়ন পেলেও আ জ ম নাছিরের সমর্থন থাকবে সুমনের দিকে। সুমনের সভায় অংশ নিয়ে সেই বার্তা হয়তো দিলেন নগর আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক!

তবে সভায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন নিজস্ব একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন ডামি প্রার্থী দেওয়া যাবে। এই বক্তব্যের পর চট্টগ্রামে অনেক আসনে আওয়ামী লীগের বহু নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেছেন। চট্টগ্রাম-১১ আসনে জিয়াউল হক সুমনও এর মধ্যে একজন। সুমন আমাকে দাওয়াত দেওয়ায় আমি সভায় অংশ নিয়েছি। এখানকার যারা নেতৃবৃন্দ আছে, তাঁদের বক্তব্য আগামীকাল (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠেয় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভায় তুলে ধরা হবে। সভার সিদ্ধান্তগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছানো হবে। এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়ে যেরকম দিক নির্দেশনা দেবেন সেটিই মানা হবে।

এবার এই আসনে নাছিরের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন নগর আওয়ামী লীগের দুই সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চুও। তবে তাঁদের মধ্যে খোরশেদ আলম সুজনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া তিনি কেউ প্রার্থী হলে তাঁকে 'দেখবেন' বলেও জানিয়েছে।

খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমি দল করি। তাই দলের মনোনয়নের বাইরে আমি নির্বাচন করব না। তবে দলীয় মনোনয়ন যিনি পেয়েছেন, তিনি দলের কেউ নন। আমি না করলেও হয়তো দলের অন্য কেউ প্রার্থী হবেন। যিনি প্রার্থী হবেন তাকে দেখব।

সেক্ষেত্রে আ জ ম নাছিরের পাশাপাশি খোরশেদ আলম সুজনের সমর্থন পেলে জিয়াউল হককে হারাতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে হবে তিনবারের সংসদ সদস্য এম এ লতিফকে। 

এ সম্পর্কিত আরও খবর