আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে পালিয়ে না যাবার জন্য অনুরোধ জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দয়া করে নির্বাচনের খেলা থেকে পালিয়ে যাবেন না। নির্বাচনে আসুন, অংশগ্রহণ করে আপনাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। আপনারা দশ শতাংশ ভোট পান কিনা সেটি পরখ করে দেখুন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন আমরা ওয়াকওভার চাই না, নির্বাচনী খেলায় আপনারা আসুন, আমরা খেলে বিজয় লাভ করতে চাই, আওয়ামী লীগ খেলে আপনাদেরকে গোল দিতে চাই। কিন্তু বিএনপি খেলা থেকে পালিয়ে যেতে চান।
শনিবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাবেক সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ ও সাবেক বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল আলমের মৃত্যুতে আয়োজিত শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ এমপি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এস. এম. আবুল কালাম।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এখন দুই ভীতি, একটা হচ্ছে নির্বাচন ভীতি, আরেকটা হচ্ছে মানুষ। সেজন্য বিএনপি মহাসচিবসহ তাদের নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিশেষ করে মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর বিএনপির মাথা আরো বেশি খারাপ হয়েছে। কারণ এখন বিএনপি আর নির্বাচন প্রতিহত এবং বর্জন করার কথা বলতে পারবে না, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নাকি আওয়ামী লীগ ১০ শতাংশ ভোটও পাবে না। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনের সময় জিয়াউর রহমান আমাদের ওপর স্টিম রোলার চালিয়েছিল। চট্টগ্রাম শহরে বিএনপি’র ক্যাডারদের দা কিরিচ আর লোহার রডসহ নামিয়ে দিয়ে মহড়া দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ঠিকমতো ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। সেই নির্বাচনেও আমরা ৩৩/৩৪ শতাংশ ভোট পেয়েছি। আসলে আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহণ করেন তাহলে তারাই ১০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেনা।
বিএনপিকে কেন মানুষ ভোট দিবে প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সাড়ে তিন হাজার মানুষ পুড়িয়েছে। তারমধ্যে পাঁচ’শ জন মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেছে। চার হাজারের মত গাড়ি পুড়িয়েছে, এবং মানুষের সম্পত্তি জ্বালিয়ে দিয়েছে। পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করেছে। বিএনপির এজন্য মানুষের কাছে যেতে ভয়।
বিএনপি এখন ঘাপটি মেরে বসে আছে জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা আবার বের হয়ে জনগণের ওপর হামলা পরিচালনা করবে। তারা জানে নির্বাচনে জিতবে না, এখন চেষ্টা করবে দেশে গন্ডগোল লাগানোর। গন্ডগোল লাগিয়ে দেশে একটা বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু জনগণ তাদেরকে সেই সুযোগ আর দিবে না।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাদের সাথে অন্যদের পার্থক্য আছে। সেই পার্থক্য প্রয়াত মোসলেম উদ্দিন আহমদ ও নুরুল আলমের জীবন সম্পর্কে আলোচনা করি তাহলে আমরা দেখতে পায়। এখন অনেকেই রেডিমেইড নেতা হতে চাই, টাকা দিয়ে রাজনীতি কিনতে চান। আওয়ামী লীগের রাজনীতি কখনো টাকার কাছে বিক্রি হয় না, হবে না এবং বিক্রি হতে দিবনা। রেডিমেইড নেতা হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ নয়, সেজন্য হচ্ছে বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টি। সেখানেই হচ্ছে আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টির পার্থক্য।