মজিবুল হক চুন্নু আবোল-তাবোল বকছেন: রাঙ্গা

জাতীয় পার্টি, রাজনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 06:39:45

জাতীয় সংসদের বিরোধদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, আমার অব্যাহতির পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু পুরোপুরি মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। উনি অবশ্য ইদানিং অনেক আবোল-তাবোল কথা বলা শুরু করেছেন।

রাঙ্গা বলেন, মুজিবুল হক চুন্নু ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, বলেছেন নির্বাচনে দুর্নীতি হয়েছে। ওইসব নির্বাচনে তিনিও এমপি হয়েছেন। ভাগ্যের জোরে মন্ত্রিসভায় ঠাই পেয়েছেন। ওনার মধ্যে নৈতিকতা বোধ থাকলে এসব কথা বলার আগে পদত্যাগ করতো।

মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে আমি নাকি মাস খানেক আগে ক্ষমা চেয়েছিলাম। এ তথ্য তিনি কোথায় পেলেন। আমি কখনই ক্ষমা চাইনি। আমার সম্পর্কে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। মিডিয়ার কাছে গলাবাজি করলেই মিথ্যা সত্য হয়ে যাবে না।

রাঙ্গা বলেন, দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে সুখে ‍দুঃখে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আছি। ২৭ বছর ধরে কখনও সভাপতি কখনও সেক্রেটারি থেকেছি রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির। রংপুরকে জাতীয় পার্টির দুর্গে পরিণত করতে অনেক ঘাম-শ্রম দিয়েছি। আমি ওনার মতো বসন্তের কোকিল আমি নই। জাতীয় পার্টিতে ওনি বসন্তের কোকিল হিসিবে পরিচিত। পার্টিতে তার কিঞ্চিত অবদান দেখাতে পারবে না।

চুন্নু ছিলেন মহসিন হল ছাত্রদলের সভাপতি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাকে সংসদ সদস্য বানিয়েছেন। জাতীয় পার্টির পতনের পর তার কি ভূমিকা ছিল! তাকে কি কেউ কোন কর্মসূচিতে দেখেছে! কোথায় গিয়ে আত্মগোপন করে ছিলেন, জাতীয় পার্টি যখন ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তখন আবার উদয় হয়েছেন। জাতীয় পার্টির সংগঠনের প্রতি তার কি অবদান রয়েছে!

মহাসচিব পদেও তাকে বাড়ি থেকে ডেনে এনে বসানো হয়েছে। বড় বড় কথা বলার আগে আয়নায় নিজের দিকে তাকানো উচিত তার। পার্টির চেয়ারম্যানের কাছে সস্তা বাহবা নেওয়ার জন্য আবোল তাবোল বক্তব্য দিয়ে নিজেকেই হাস্যকর করে তুলছেন চুন্নু।

অব্যাহতি প্রসঙ্গে রাঙ্গা বলেন, সম্প্রতি বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ জাপার কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করেছেন। সেই চিঠির পর পার্টির চেয়ারম্যান আমাকে সংসদীয় দলের বৈঠক আহ্বান করতে বলেন। আমি তার কাছে বৈঠকের এজেন্ডার বিষয়ে জানতে চাই। তখন ওনি (চেয়ারম্যান) আমাকে বলেন এজেন্ডার প্রয়োজন নেই। আমরা ৩১ আগস্ট সভা করি, রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়। একদিন পর ১ সেপ্টেম্বর তারিখে স্বাক্ষর করা হয়। আমি বলেছিলাম এজেন্ডা ছাড়া এভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। রওশন এরশাদ এভাবে সরানোর প্রক্রিয়া সঠিক হয় নি। এতেই ক্ষেপেছেন জিএম কাদের। আকর্ষিকভাবে আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর ) জাপার বনানী কার্যালয় গণমাধ্যম কর্মীদের এক প্রশ্নের জাপা মহাসচিব বলেন, মসিউর রহমান রাঙ্গার অব্যাহতি পার্টির গঠনতন্ত্র ও বিধি মোতাবেক হয়েছে। এক মাস আগেও এমন একটি অবস্থার প্রেক্ষিতে জাতীয় পাটি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। তখন সংগঠন বিরোধী কোন কাজ করবেন না বলেও অঙ্গীকার করেছিলেন।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর কোন রকম শোকজ কিংবা নোটিশ ছাড়াই তাকে মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপিকে অব্যাহতি দেয় জাপা। মসিউর রহমান রাঙ্গা গত কাউন্সিলে মহাসচিব নির্বাচিত হলেও কয়েক মাসের মাথায় তাকে মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দেন জিএম কাদের। এর আগে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে জাপার তৎকালীন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে রাঙ্গাকে মহাসচিব করেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এরশাদের মৃত্যুর পর জিএম কাদের এর চেয়ারম্যান পদ নিয়ে জাপায় বিভক্তি দেখা দিলে শক্তহাতেই ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন পার্টিকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর