ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে ধোঁয়াশা, ক্ষুব্ধ বিএনপি জোটের শরিকরা  

বিএনপি, রাজনীতি

মুজাহিদুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম   | 2023-08-31 18:58:51


২০ দলীয় জোটের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত:

ঐক্য প্রক্রিয়ায় লিয়াঁজো করতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দায়িত্ব

সরকার পতনের লক্ষ্যে ২০ দলীয় জোট যুগপৎ আন্দোলন করবে।

নির্বাচনে আসন বন্টনে শরিকদের সর্বোচ্চ ছাড় দেয়া হবে।

ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে জোটের দ্বিধাদ্বন্দ্বের কিছু নেই।

রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) একক জনসভা করবে বিএনপির, তবে ২০ দলের পক্ষ থেকে আলাদা জনসভা ডাকা হবে।

পরবর্তী কর্মসূচিগুলো ২০ দলের ব্যানারে হবে।

বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে ব্যাক স্টেজে থাকতে রাজি আছে জামায়াত ইসলামী।


বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়তে প্রাণপণ চেষ্টা করছে বিএনপি। দফায় দফায় বিএনপির সিনিয়র নেতারা বৈঠক করছেন। কখনো দলীয় ফোরামে কখনো ২০ দলীয় জোট কিংবা জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে। লক্ষ্য যে কোনো মূল্যে সরকার বিরোধী একটা জোট গড়ে তোলা। তাতে বড় ধরনের ছাড় দিতেও প্রস্তুত দলটি। তবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিকদের কাছে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ জোটের শীর্ষ নেতারা।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জোটের শরিক নেতারা অভিযোগ করেন ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপির ঐক্য নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু তাদের কিছুই জানানো হচ্ছে না। এমনকি তাদের কেন অন্ধকারে রাখা হচ্ছে সেটাও জানতে চান অনেক শরিক নেতা।

এছাড়া জোটের নেতারা বিএনপিকে জানিয়েছে, রাজপথে লড়াই সংগ্রামে ২০ দলীয় জোটের শরিকরা দীর্ঘ সময় ধরে দলটির পাশে আছে।  তাই ছাড় দিয়ে জাতীয় ঐক্য করতে গিয়ে জোটের শরিকদের যেন বিএনপি ভুলে না যায়। তাদেরকে যেন যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়।

এদিকে, রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন আছে, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে যুক্তফ্রন্ট বিএনপির কাছে ১৫০ সংসদীয় আসন দাবি করেছে। এছাড়া নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ক্ষমতায় ভারসাম্যের কথা বলে ২ বছর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চান। এর প্রেক্ষিতে ২০ দলীয় জোটের বিভিন্ন ফোরামে এমন দাবির তীব্র সমালোচনা করা হয়।

বিএনপির পক্ষ থেকে শরিকদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, জোটের স্বার্থ রক্ষা করেই ঐক্য প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া হবে। আসন নিয়ে ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে জোটের শরিকদের দ্বিধা দ্বন্দ্বের কিছু নেই। ইতোমধ্যে বিএনপি কয়েকটি দাবির সঙ্গে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে একমত হলেও যুগপৎ আন্দোলনের অভিন্ন কর্মসূচি কী হবে তা নির্ধারণ করা হয়নি।

বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য তৈরিতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় লিয়াঁজো কমিটি গঠন করতে একটি বৈঠক আহ্বান করা হয়। তবে বিএনপির অনুরোধ ওই কমিটি গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিএনপির জনসভা থেকে একটি রুপরেখা ঘোষণা করা হবে। যার ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া যেতে পারে। এরপর অভিন্ন কর্মসূচি দেয়া হবে।

বৈঠকে বৃহত্তর ঐক্যের প্রশ্নে বিএনপির শরিক দল জামায়াত ইসলামী ছাড়ার দাবি নিয়েও আলোচনা হয়। এক্ষেত্রে জামায়াত ইসলামীর পক্ষ থেকে দলটির শুরা সদস্য আব্দুল হালিম জানান, সরকারের পতনের জন্য যেকোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্য হোক। লক্ষ্যে পৌঁছাতে যারা যারা আসতে চাই তাদের নিয়ে ঐক্য গড়ে উঠুক। তাদের কোনো সমস্যা নেই।

এদিকে, আগামী রোববার বিএনপির জনসভায় থেকে কী ঘোষণা আসতে পারে সে বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানাতে চান না দলটির নেতারা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে রাজপথে নেমে দাবি আদায় করা হবে। অপেক্ষা করুন, বড় কর্মসূচি আসছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর