বিএনপি ও আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হাতকড়া পরিয়েছে: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি, রাজনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-24 08:16:32

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের হাতে হাতকড়া পরিয়ে দিয়েছে।

শুক্রবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাপার বনানী কার্যালয়ে পার্টির ৩৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তরের পরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার পদ্ধতি থেকে সংসদীয় পদ্ধতি চালু করেছে। কিন্তু সংবিধান সংশোধন করে তারা ৭০ ধারা যোগ করেছে। এতে সংখাগরিষ্ঠতা পেয়ে যে দল সরকার গঠন করে সেই দলের প্রধানই হন সংসদীয় দলের প্রধান এবং সরকার প্রধান। আর ৭০ ধারার কারণে কোন সংসদ সদস্য দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিতে পারেন না। তাই সরকারদলীয় প্রধান যা চান তাই সংসদে পাশ হয়। আবার সরকার প্রধান যা চাননা তা সংসদে পাশ হয়না। এতে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে এবং সরকারের জবাবদিহিতা থাকেনা। নিয়ন্ত্রণহীন ক্ষমতায় দুর্নীতি বেড়ে যায়। তাই বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মোট ৫ বার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ণ হয়েছিলো।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি গেলো ৩০ বছর ধরে ৭০ ধারা অপব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণহীন ক্ষমতা ভোগ করেছে। সংসদ যেখানে সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করবে সেখানে সরকারই সংসদকে নিয়ন্ত্রণ করছে। ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের কোন পথ আর নেই। তাই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুর্নীতি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির শাসনামলে দুর্নীতি ছিলোনা, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ছিলোনা, ক্ষমতার অপব্যবহার ছিলোনা। গেলো ত্রিশ বছরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শাসনামলের চেয়ে জাতীয় পার্টির শাসনামলে বেশি সুশাসন ছিলো। জাতীয় পার্টির আমলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছিলো। তাই জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা বুক ফুলিয়ে কথা বলতে পারে। দেশের মানুষের কাছে গর্বভরে জাতীয় পার্টির প্রতি আহ্বান জানাতে পারে।

জিএম কাদের বলেন, বিএনপি এখন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ডাক-চিৎকার করছে। প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপি কি সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়েছে কখনো? বিএনপি ও আওয়ামী লীগ-এর মহাসচিবগণ প্রায়ই বিভিন্ন ইস্যুতে বাহাস করছেন। কিন্তু তারা সবাই গণতন্ত্রের হাতে হাতকড়া পরিয়ে গণতন্ত্রের স্বাভাবিক স্বাদ নষ্ট করেছে। আগামী দিনের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি অনেক সম্ভাবনাময় দল। জাতীয় পার্টিকে ছাড়া কেউই রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে পারছেনা।

এ সময় জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, গেলো ১০ থেকে ১২ বছরের যে অসাধারণ উন্নয়ণ হয়েছে তার কৃতিত্ব ধরে রাখা যাবেনা যদি প্রকৃত গণতন্ত্র না থাকে। এখন মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কিন্তু জাতীয় পার্টির শাসনামলে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে কোন প্রশ্ন ছিলোনা। এখন নির্বাচনে প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা, কারণ সবাই জানে নির্বাচনের ফলাফল কী হবে।

 জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ। যারা জাতীয় পার্টির অনৈক্য নিয়ে গল্প করেছেন তাদের বক্তব্য মিথ্যা প্রমাণ করে জাতীয় পার্টি দুর্বার বেগে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।

একই মিলনায়তনে সন্ধ্যায় জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সদস্যরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহবায়ক শেরিফা কাদের-এর পরিচালনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা করেন সাংস্কৃতিক পার্টির সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদ।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মহাসচিব- জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ ও সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, এস.এম. ফয়সল চিশতী, এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, ক্কারী মোঃ হাবিবুল্লাহ বেলালী, উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তফা আল মাহমুদ, সালমা হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আহসান শাহজাদা প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর