কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সমর নায়ক। মুক্তিযুদ্ধের সময় কাদেরিয়া বাহিনী গঠন করে পরিচিত হন ‘বাঘা কাদের’ নামে। পেয়েছিলেন বঙ্গবীর উপাধি। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন।
নির্বাচন হলে অশান্তি দূর হবে জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, দেশে নির্বাচনটা সবচাইতে কাঙ্ক্ষিত, তবে তা পাঁতানো নির্বাচন নয়। সেটা হতে হবে বিশ্বাসযোগ্য একটি নির্বাচন। ভোটার নিজে ভোট দেয় নাই ভোট হয়ে গেছে-এমনটি নয়। প্রত্যেকে যেন বলতে পারে নিজের ইচ্ছাতে ভোট দিয়েছি। এমন নির্বাচন দিতে পারলে দেশে যে অস্থিরতা চলছে তা দূর হবে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, আপনি আলোচনায় বসুন, দেশকে বাঁচান। প্রধান বিরোধী দলের নেত্রী লাগাতার ধর্মঘট, হরতাল ও অবরোধ দিয়েছিলেন। তাকেও বলেছিলাম, গরীব মানুষের কষ্ট হচ্ছে আপনি অবরোধ তুলে নিন। কেউ কথা শুনেনি। জননেত্রী শেখ হাসিনাও শুনেননি, খালেদা জিয়াও তার অবরোধ কিন্তু প্রত্যাহার করেননি। তারপর দু’বছর জনগণই প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে বঙ্গবীর বলেন, নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত সম্মানজনক এবং স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। সাংবিধানিকভাবে প্রচুর ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠান। শিডিউল ঘোষণার পর সরকারের চাইতেও এটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে যতো নির্বাচন কমিশন হয়েছে এইরকম নির্বাচন কমিশনের মতো অথর্ব, অযোগ্য অদক্ষ, কমিশন হয়নি। তারা যতোগুলো নির্বাচন করেছে একটাতেও তাদের স্বার্থকতা দেখাতে পারেনি। এখন তাদেরকে দিয়ে যদি নির্বাচন করা হয় তাহলে বর্তমান সরকারেরই সব থেকে বদনাম বেশি হবে। সেই বদনামের ৯০ ভাগ জননেত্রী শেখ হাসিনার হবে।
নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়েছি। সংসদ না ভেঙে নির্বাচন হয়, এটা আমি কোনদিন দেখিনি। সংসদ বহাল থাকলে সাংসদরা সংবিধান অনুসারে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। আবার সংসদ সদস্য থাকতেই নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে দাঁড়াবার কোন সুযোগ নেই। সংসদ নির্বাচনের ৯০ দিন আগে আপনা আপনি ভেঙে যাবে। এটা কাউকে ভেঙে দিতেও হবে না, রাখতেও হবে না। এটা সংবিধানের কথা। আরও পড়ুন, ‘সরকার পতনের প্রচেষ্টায় যদি ঐক্য হয়- তাতে আমি নাই’
বঙ্গবন্ধু না থাকায় জাতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আমি কি হতাম তা জানিনা। তবে জাতির প্রচণ্ড উপকার হতো, বঙ্গবন্ধু না থাকায় জাতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এক সময় আমাদের অনুদানে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও নেপালের ছেলেরা এখানে লেখাপড়া করত। আজকে তাদের ওখানে বেগার খাটতে যায়। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আমার বাঙালি মালয়েশিয়ায় জঙ্গল কাটতে যেতো না।
দেশের রাজনীতিতে বিদেশিরা কতটা প্রভাব রাখতে পারবে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশিদের আমাদেরকে কিছু করার সুযোগ নেই। আমরা যদি সুযোগ না দিই। আমরা আমাদের মর্যাদা রক্ষা করে যদি চলি, বিদেশিদের যতখানি করা দরকার তার বাইরে তারা যেতে চাইবে না।